ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

আশুলিয়ায় ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে গ্রেফতার-২

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩
  • ৩৩০০ বার পড়া হয়েছে

 র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং সাভারের আশুলিয়া জামগড়া এলাকায় বহুতল ভবনের ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ভবনের অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করে। পরবর্তীতে উক্ত ফ্ল্যাট থেকে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের সন্তানের অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে রত ১ অক্টোবর ২৩ ইং আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।একই পরিবারের ০৩ জনের হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।

গতকাল রাতে র‍্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হোতা ১। মোঃ সাগর আলী (৩১) পিতাঃ মোবারক মোগবর আলী, টাংগাইল ও তার অন্যতম সহযোগী (স্ত্রী) ঈশিতা বেগম (২৫) স্বামীঃ মোঃ সাগর আলী, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুরদের’কে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৪ উদ্ধার করা হয় হত্যাাকান্ডের সময় ভিকটিম মোক্তার হতে লুটকৃত আংটি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।

দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন গ্রেফতারকৃতরা প্রথমে অর্থের লোভে ও পরবর্তীতে কাক্সিক্ষত অর্থ না পেয়ে ক্ষোভ থেকে উক্ত হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ গ্রেফতারকৃত সাগর সাভার বারইপাড়া এলাকার একটা চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় ভিকটিম মোক্তারকে পাশর্বর্তী একটি কবিরাজি ও ভেষজ ঔষধের দোকানে তার শারীরিক সমস্যার বিষয়ে চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে দেখে। গ্রেফতারকৃত সাগর জানতে পারে ভিকটিম মোক্তার ঐ দোকানে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসা বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করেও কোন ফলাফল পায়নি।

ভিকটিম মোক্তার তার ও তার পরিবারের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার কথাও গ্রেফতারকৃত সাগরকে জানায়। গ্রেফতারকৃত সাগর জানায় যে, তার স্ত্রী একজন ভালো কবিরাজ এবং সে তার সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত সাগর উক্ত চিকিৎসার জন্য ভিকটিম মোক্তারের সাথে ৯০০০০/- (নব্বই হাজার) টাকার চুক্তি করে। গ্রেফতারকৃত সাগর ও তার স্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সকালে ঔষধসহ তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করবে বলে জানায়। গ্রেফতারকৃত সাগরের সাথে যোগাযোগের জন্য ভিকটিম মোক্তার মোবাইল নাম্বার চাইলে গ্রেফতারকৃত সাগর তার আত্নীয়ের মোবাইল নাম্বার প্রদান করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে,পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত সাগর বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীকে উক্ত বিষয়ে জানায় এবং তার স্ত্রী নগদ বিপুল অংকের টাকার কথা শুনে রাজি হয়। তারা পরিকল্পনা করে ভুক্তভোগী মোক্তারের বাসায় গিয়ে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে তার পরিবারের সবাইকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তাদের অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করবে। উক্ত পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত সাগর গাজীপুরের মৌচাক এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে ১ বক্স (৫০টি) ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ রাতে গ্রেফতারকৃত সাগরের সাথে তার আত্নীয়ের মোবাইল ফোনে কথা বলে শর্ত মোতাবেক চিকিৎসার পরবর্তীতে ৯০,০০০ হাজার টাকা প্রদানের ব্যাপারে ভিকটিম মোক্তার আশ্বাস প্রদান করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সকালে গ্রেফতারকৃত সাগর ও তার স্ত্রী গাজীপুরের মৌচাক থেকে ভিকটিম মোক্তারের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং জামগড়া মোড়ে ভিকটিম এর সাথে দেখা করে ভিকটিমের সাথে তার বাসায় যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মোক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী সাহিদা বেগম আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার সন্তান মেহেদী হাসান জয় স্থানীয় একটি স্কুলে ৭ম শ্রেনিতে পড়াশোনা করতো। ভিকটিম মোক্তার ও তার স্ত্রী চাকুরীর উদ্দেশ্যে সন্তানসহ বেশকিছু দিন ঠাকুরগাঁও হতে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন বলে জানা যায়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে (ভাড়া বাসায়) আসে বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

আশুলিয়ায় ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে গ্রেফতার-২

আপডেট সময় : ০৫:২১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

 র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং সাভারের আশুলিয়া জামগড়া এলাকায় বহুতল ভবনের ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ভবনের অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করে। পরবর্তীতে উক্ত ফ্ল্যাট থেকে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের সন্তানের অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে রত ১ অক্টোবর ২৩ ইং আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।একই পরিবারের ০৩ জনের হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।

গতকাল রাতে র‍্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হোতা ১। মোঃ সাগর আলী (৩১) পিতাঃ মোবারক মোগবর আলী, টাংগাইল ও তার অন্যতম সহযোগী (স্ত্রী) ঈশিতা বেগম (২৫) স্বামীঃ মোঃ সাগর আলী, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুরদের’কে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৪ উদ্ধার করা হয় হত্যাাকান্ডের সময় ভিকটিম মোক্তার হতে লুটকৃত আংটি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।

দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন গ্রেফতারকৃতরা প্রথমে অর্থের লোভে ও পরবর্তীতে কাক্সিক্ষত অর্থ না পেয়ে ক্ষোভ থেকে উক্ত হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ গ্রেফতারকৃত সাগর সাভার বারইপাড়া এলাকার একটা চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় ভিকটিম মোক্তারকে পাশর্বর্তী একটি কবিরাজি ও ভেষজ ঔষধের দোকানে তার শারীরিক সমস্যার বিষয়ে চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে দেখে। গ্রেফতারকৃত সাগর জানতে পারে ভিকটিম মোক্তার ঐ দোকানে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসা বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করেও কোন ফলাফল পায়নি।

ভিকটিম মোক্তার তার ও তার পরিবারের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার কথাও গ্রেফতারকৃত সাগরকে জানায়। গ্রেফতারকৃত সাগর জানায় যে, তার স্ত্রী একজন ভালো কবিরাজ এবং সে তার সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত সাগর উক্ত চিকিৎসার জন্য ভিকটিম মোক্তারের সাথে ৯০০০০/- (নব্বই হাজার) টাকার চুক্তি করে। গ্রেফতারকৃত সাগর ও তার স্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সকালে ঔষধসহ তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করবে বলে জানায়। গ্রেফতারকৃত সাগরের সাথে যোগাযোগের জন্য ভিকটিম মোক্তার মোবাইল নাম্বার চাইলে গ্রেফতারকৃত সাগর তার আত্নীয়ের মোবাইল নাম্বার প্রদান করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে,পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত সাগর বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীকে উক্ত বিষয়ে জানায় এবং তার স্ত্রী নগদ বিপুল অংকের টাকার কথা শুনে রাজি হয়। তারা পরিকল্পনা করে ভুক্তভোগী মোক্তারের বাসায় গিয়ে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে তার পরিবারের সবাইকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তাদের অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করবে। উক্ত পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত সাগর গাজীপুরের মৌচাক এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে ১ বক্স (৫০টি) ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ রাতে গ্রেফতারকৃত সাগরের সাথে তার আত্নীয়ের মোবাইল ফোনে কথা বলে শর্ত মোতাবেক চিকিৎসার পরবর্তীতে ৯০,০০০ হাজার টাকা প্রদানের ব্যাপারে ভিকটিম মোক্তার আশ্বাস প্রদান করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সকালে গ্রেফতারকৃত সাগর ও তার স্ত্রী গাজীপুরের মৌচাক থেকে ভিকটিম মোক্তারের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং জামগড়া মোড়ে ভিকটিম এর সাথে দেখা করে ভিকটিমের সাথে তার বাসায় যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মোক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী সাহিদা বেগম আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার সন্তান মেহেদী হাসান জয় স্থানীয় একটি স্কুলে ৭ম শ্রেনিতে পড়াশোনা করতো। ভিকটিম মোক্তার ও তার স্ত্রী চাকুরীর উদ্দেশ্যে সন্তানসহ বেশকিছু দিন ঠাকুরগাঁও হতে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন বলে জানা যায়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে (ভাড়া বাসায়) আসে বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।