মোঃ রাসেল হুসাইন নড়াইল:- নড়াইলের নড়াগাতী থানার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের মুলশ্রী গ্রামে মোর্শেদ শেখের স্ত্রী বৃষ্টি বেগমকে মারপিট ও শ্লীলতাহানির চেষ্টায় মামলা দায়ের হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃষ্টি বেগম চেয়ারম্যান মল্লিক মাহামুদুল ইসলাম, ওয়ার্ড সদস্য গোলাম কবির তপন ও সাংবাদিক বাবলু মল্লিকসহ ২১ জনকে আসামী করে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মোর্শেদ শেখ ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে।
মামলা ও বাদীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, গত মাসের ২১ তারিখে বাদীর শশুর জাহাঙ্গীর শেখকে অন্যের রিক্সা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে জরিমানা ও নাকে ক্ষত দেওয়ায় তার পুত্র ও পুত্র বধু বৃষ্টি বেগম বিষয়টি ওয়ার্ড মেম্বার গোলাম কবির তপনের নিকট শুনতে গেলে সে সহ অন্যান্য আসামীরা পুত্র বধুকে মারপিট ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং ওই দিনই জুম্মার নামাজ শেষে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোক তাদের বাড়ীতে ঢুকে দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং মহিলাদের মারপিটসহ বিবস্ত্র করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ চেষ্টা করায় আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ন্যায্য বিচার দাবী করেছেন তারা।
স্থানীয় রকিত শেখ ও ইলানুর শেখসহ অনেকে জানান, জাহাঙ্গীর শেখ একজন চোর। রকিতের এক বৃদ্ধ নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীরের বাড়ীতে রিক্সা চার্জ দিত। কিছু দিন আগে তিনি রিক্সা নিয়ে এক্সিডেন্ট করলে স্থানীয়রা তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং রিক্সটি পুলিশ হেফাজতে থাকে। বৃদ্ধের পরিচয় সনাক্ত করতে বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট করলে জাহাঙ্গীর শেখ কাউকে না জানিয়ে থানায় গিয়ে ওই রিক্সা নিজের বলে দাবী করে এবং ওই বৃদ্ধের নিকট ৯ হাজার টাকাপাবে বলে জানায়। এদিকে বৃদ্ধ রিক্সা চালকের স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রিক্সাটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় গেলে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে জাহাঙ্গীর শেখ রিক্সাটি তার বলে দাবী করেছেন। অতঃপর আহত বৃদ্ধের জ্ঞান ফিরলে জানান রিক্সাটি তার নিজের এবং জাহাঙ্গীর কোন টাকাও পাবেনা। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর ভুল স্বীকার করে জরিমানা ও নাকে ক্ষত দিয়ে মুক্তি পান। বিষয়টিকে পুঁজি করে এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের উস্কিয়ে মনগড়া ঘটনা তৈরী করে এলাকার মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে।
এ দিকে মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহামুদুল ইসলাম ও মেম্বার গেলাম কবির তপন বলেন, বৃষ্টি বেগমের নৈতিক চরিত্র মোটেই ভালো নয় এবং তার শশুর জাহাঙ্গীর শেখ একটা চোর প্রকৃতির লোক। এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটিয়ে সে এলাকা ছাড়াও হয়েছে। ইতিপূর্বে ওই গৃহবধূ তার আপন শশুরের নামেও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ আনেন। রিক্সা আত্মসাৎ চেষ্টায় ধরা পড়ায় শশুরের অপমানের প্রতিশোধ নিতে একটি রাজনৈতিক মহলের ইন্ধনে বৃষ্টি বেগম মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মানহানীর মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।