এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব-১০ আত্মপ্রকাশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। জঙ্গিবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব-১০ সদা সচেষ্ট রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ জানতে পারে যে,কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিল ও বিদেশী মদসহ মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে এসে তাদের সুবিধাজনক স্থানে মজুদ করে রাখছে। অতঃপর তারা উক্ত ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রাইভেটকার যোগে সরবরাহ করে আসছে। র্যাব-১০ আরও জানতে পারে আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে মাদকের একজন বড় ডিলার তার সঙ্গীয় অপরাপর ব্যবসায়ীদের সহযোগে বিপুল পরিমান ফেনসিডিল দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হতে সংগ্রহ করে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকায় মজুদ করে রাখছে। এ বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ একটি আভিযানিক দল উক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১০ জুন ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ৮. ঘটিকায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে উল্লেখিত ঘটনাস্থল শফিজুল কর্তৃক ভাড়াকৃত জৈনিক বাচ্চু ভুঁইয়ার একতলা বাড়ির সামনে রাখা একটি প্রাইভেট কারের ভিতরে ৩৭০ (তিনশত সত্তর) বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করতঃ উক্ত বাড়ীর ভিতর হতে কুখ্যাত মাদক ডিলার/ব্যবসায়ী শেখ শফিজুল ইসলাম (৪৭)মোঃ মাসুদ রানা (৪২)দের গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত শফিজুল ও মাসুদকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে শফিজুলের উক্ত ভাড়াকৃত একতলা বাড়ির একটি কক্ষ হতে আরো ১১০০ (এক হাজার একশত) বোতল ফেনডিসিল ও ০৪ (চার) বোতল বিদেশী মদসহ আনুমানিক ৪৪,৫০,০০০/- (চুয়াল্লিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা মূল্যমানের সর্বমোট ১৪৭০ (এক হাজার চারশত সত্তর) বোতল ফেনসিডিল এবং ০৪ (চার) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়।এ সময় তাদের নিকট থেকে মাদক বহনে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেট কার ও ০১টি মোটর সাইকেল জব্দ এবং মাদক বিক্রয়ের নগদ-১,৪৮,৬০০/- (এক লক্ষ আটচল্লিশ হাজার ছয়শত) টাকা উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে র্যাব-১০ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডি.ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান,গ্রেফতারকৃত শফিজুল ও মাসুদ পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা উভয়ই মিলে দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে জব্দকৃত প্রাইভেট কারযোগে ফেনসিডিল ও বিদেশী মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করতো।
অতঃপর উক্ত ফেনসিডিল ও মদ শফিজুলের বর্তমান ঠিকানা ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও এলাকার একটি বাড়ীতে মজুদ করে রাখত। পরবর্তীতে সেগুলো তাদের জব্দকৃত প্রাইভেট কার ও মোটর সাইকেলযোগে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করত। মূলত তারা স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এই মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত শফিজুলের বিরুদ্ধে যশোর জেলার কেশবপুর থানায় ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানায় ২টি মাদক মামলা এবং মাসুদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ওয়ারী থানায় ১টি মাদক মামলা রয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।