ঢাকা ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

আগুন লাগা উড়োজাহাজকে দ্রুত সময়ে রক্ষার কৌশল দেখালো বেবিচক

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ১২:২৫:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
  • ৩০৬২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এবিসি এয়ারলাইন্সের (ছদ্মনাম) একটি ফ্লাইট ৫০ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। রানওয়েতে কিছুক্ষণ চলার পর পাইলট দেখলেন তার ডান পাশের ইঞ্জিনে আগুন লেগেছে। তিনি তাৎক্ষণিক কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি অবহিত করলেন। এরপর কন্ট্রোল রুম থেকে সকল সংস্থাকে ইমারজেন্সি তথ্য পাঠানো হয়।

শুরু হয় উড়োজাহাজের আগুন নেভানো ও যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার প্রক্রিয়া। আর এই প্রক্রিয়াতে যোগ দেয় সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব ফায়ার টিম, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স টিম, বিমান বাহিনীর টিম এবং এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের টিমসহ নানা সংস্থার সদস্যরা।

দ্রুততার সাথে রানওয়েতে পৌঁছে শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। একদিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা অন্যদিকে যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় বের করে আনা এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। আগুন নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি আহত যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

এমন অবস্থায় গুরতর আহত যাত্রী বের করার পর দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে এমন অবস্থায় যোগ দেয় বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকাপ্টার। এমনিভাবে আধাঘন্টার কম সময়ের মধ্যে উড়োজাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রন আনা হয়। পাশাপাশি ৫০ যাত্রীকে বের করে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় যাতে যোগ দেয় বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকাপ্টার।

না আসলে এমন কিছুই ঘটেনি। এটি আসলে দূর্ঘটনার মহড়ার একটি গল্প। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক  বিমানবন্দরে কোন উড়োজাহাজে হটাৎ যদি আগুন ধরে যায় তাহলে কিভাবে এবং কত দ্রুততার সাথে তা নিয়ন্ত্রন ও যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনা যায় তারই একটি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় প্রতি দুই বছর পরপর যে মহড়া করার নির্দেশনা দেয়া রয়েছে তারই অংশ হিসেবে রোববার সকালে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মহড়া প্রত্যক্ষ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর এ এফ এম আতিকুজ্জামান।

পুরো আয়োজন সমন্বয় করেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আজকের মহড়ার উদ্দেশ্য হলো জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তৎপরতা পরীক্ষা করা। ফায়ার  ফাইটিং গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির পরীক্ষা নিরীক্ষা করাসহ জাতীয় পর্যায়ে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় দক্ষতা অর্জন করা। 

তিনি বলেন, আইকাওয়ের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা প্রতি দুই বছর পর পর এ ধরনের মহড়া করে থাকি। এ ধরনের মহড়ার ফলে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সক্ষমতারও জানান দেয়।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ অবস্থা মোকাবেলায় সারাবিশ্বেই আমাদের একটি সুনাম রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমরা যেভাবে এটি মোকাবেলা তা আন্তর্জাতিকভাবে অনেক প্রশংসা কুড়ায়।

বর্তমান সরকার সিভিল এভিয়েশন সেক্টরকে গুরুত্ব দিয়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। আমরা আস্থা অর্জন করতে পেরেছি বলে নানা উন্নত পরিকল্পনা হচ্ছে এবং নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের বিষয়টিও সরকারের সুনজরে আছে। 

আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত এ ধরনের দূর্ঘটনা ঘটেনি। তারপরও আমরা সতর্ক থাকি যেন আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি সেই দিকে আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকবে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

আগুন লাগা উড়োজাহাজকে দ্রুত সময়ে রক্ষার কৌশল দেখালো বেবিচক

আপডেট সময় : ১২:২৫:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এবিসি এয়ারলাইন্সের (ছদ্মনাম) একটি ফ্লাইট ৫০ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। রানওয়েতে কিছুক্ষণ চলার পর পাইলট দেখলেন তার ডান পাশের ইঞ্জিনে আগুন লেগেছে। তিনি তাৎক্ষণিক কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি অবহিত করলেন। এরপর কন্ট্রোল রুম থেকে সকল সংস্থাকে ইমারজেন্সি তথ্য পাঠানো হয়।

শুরু হয় উড়োজাহাজের আগুন নেভানো ও যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার প্রক্রিয়া। আর এই প্রক্রিয়াতে যোগ দেয় সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব ফায়ার টিম, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স টিম, বিমান বাহিনীর টিম এবং এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের টিমসহ নানা সংস্থার সদস্যরা।

দ্রুততার সাথে রানওয়েতে পৌঁছে শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। একদিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা অন্যদিকে যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় বের করে আনা এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। আগুন নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি আহত যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

এমন অবস্থায় গুরতর আহত যাত্রী বের করার পর দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে এমন অবস্থায় যোগ দেয় বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকাপ্টার। এমনিভাবে আধাঘন্টার কম সময়ের মধ্যে উড়োজাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রন আনা হয়। পাশাপাশি ৫০ যাত্রীকে বের করে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় যাতে যোগ দেয় বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকাপ্টার।

না আসলে এমন কিছুই ঘটেনি। এটি আসলে দূর্ঘটনার মহড়ার একটি গল্প। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক  বিমানবন্দরে কোন উড়োজাহাজে হটাৎ যদি আগুন ধরে যায় তাহলে কিভাবে এবং কত দ্রুততার সাথে তা নিয়ন্ত্রন ও যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনা যায় তারই একটি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় প্রতি দুই বছর পরপর যে মহড়া করার নির্দেশনা দেয়া রয়েছে তারই অংশ হিসেবে রোববার সকালে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মহড়া প্রত্যক্ষ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর এ এফ এম আতিকুজ্জামান।

পুরো আয়োজন সমন্বয় করেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আজকের মহড়ার উদ্দেশ্য হলো জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তৎপরতা পরীক্ষা করা। ফায়ার  ফাইটিং গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির পরীক্ষা নিরীক্ষা করাসহ জাতীয় পর্যায়ে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় দক্ষতা অর্জন করা। 

তিনি বলেন, আইকাওয়ের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা প্রতি দুই বছর পর পর এ ধরনের মহড়া করে থাকি। এ ধরনের মহড়ার ফলে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সক্ষমতারও জানান দেয়।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ অবস্থা মোকাবেলায় সারাবিশ্বেই আমাদের একটি সুনাম রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমরা যেভাবে এটি মোকাবেলা তা আন্তর্জাতিকভাবে অনেক প্রশংসা কুড়ায়।

বর্তমান সরকার সিভিল এভিয়েশন সেক্টরকে গুরুত্ব দিয়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। আমরা আস্থা অর্জন করতে পেরেছি বলে নানা উন্নত পরিকল্পনা হচ্ছে এবং নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের বিষয়টিও সরকারের সুনজরে আছে। 

আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত এ ধরনের দূর্ঘটনা ঘটেনি। তারপরও আমরা সতর্ক থাকি যেন আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি সেই দিকে আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকবে বলেও জানান তিনি।