ঢাকা ০৩:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

লাগামহীন দুর্নীতি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের, ধ্বংস করে দিচ্ছেন একের পর এক বিমা প্রতিষ্ঠান !

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ১২:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • ৩০৮৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি ও সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে একাধিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধি করছেন বলে ভুক্তভোগী কোম্পানির লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে।

মূলত বিমা খাতকে রক্ষা ও শৃঙ্খলিত করার জন্য বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইডিআরএ গঠিত হয়। সেই রক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রধানই যখন ভক্ষকরূপে আবির্ভূত হয় তখন গোটা বিমা খাতই হুমকির মুখে পড়ে যায় বলে দাবি করেছেন বিমাসংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য প্রশাসক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে ১৩টি গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার জন্যই নিযুক্ত হয়েছেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি অথবা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ওঠে, তাহলে সেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট কিছু ধাপ রয়েছে। যেহেতু বিমা প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি, সেহেতু এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আগে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন বিসাকের মতামত নেওয়ার দরকার ছিল। সেই সঙ্গে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকলে বিএফআইইউকেও অবহিত করা দরকার ছিল। সবচেয়ে বড় কথা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব ডিরেক্টরের কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেওয়া কিংবা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে রাতারাতি বোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের ঘটনা নজিরবিহীন। অভিযোগ রয়েছে, আইডিআরএ চেয়ারম্যান কেবল প্রশাসক নিয়োগ দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত কর্মীদের অদলবদল- ছাঁটাই হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এটিও

প্রজন্মের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অনুমোদন পেয়েছিল, এর মধ্যে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের সুযোগ্য নেতৃত্বে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গ্রাহক দাবি নিষ্পত্তি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ দাবি- দাওয়া পরিশোধের অনন্য নজির স্থাপন করে আসছিল। কিন্তু এই সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ও দুর্নীতির চেষ্টায় সুবিধা গ্রহণ করতে না পেরে একটি মহল প্রতিষ্ঠানটির পেছনে লাগে। মূলত সেই মহলটি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ তোলে। সেই অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই না করে, পরিচালনা পর্ষদের কাছে ব্যাখ্যা না চেয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে আইডিআরএ চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানে একজন অনভিজ্ঞ প্রশাসক নিয়োগ করেছেন। এই প্রশাসক মূলত ষড়যন্ত্রকারী
কর্মকর্তারা।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১১ বছর সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অসাধু কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের মুখে। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গ্রাহক দাবি নিষ্পত্তি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ দাবি-দাওয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে দেশের অন্য যে কোনো কোম্পানির চেয়ে অনেকগুণ এগিয়ে। প্রায় ৩০,০০০ মাঠকর্মীর ১১ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৮ লক্ষাধিক পলিসি গ্রাহক তৈরির মাধ্যমে সাফল্যের অনন্য দিগন্তে পৌঁছে যাচ্ছিল। ঠিক তখন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রাক্তন সি.ই.ও মীর রাশেদ বিন আমান একদল স্বার্থান্বেষী মহলের সহযোগিতায় নিজের আর্থিক লাভ, জাল-জালিয়াতি ও অনৈতিক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সোনালী লাইফের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বিজিএমই- এর সাবেক সভাপতি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও প্রতিষ্ঠান দখল করার পরিকল্পনা করে। এ লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা তথা আইডিআরএ-এর চেয়ারম্যানকে হাত করে ষড়যন্ত্রকারীরা। সরাসরি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় কোম্পানি ও এর মাঠকর্মীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের লক্ষ্যে গত ২১ এপ্রিল একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য যিনি ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ ও কোম্পানির মৌলিক ভিত্তি তথা ব্যবসা ও এর কর্মীদের

দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা বলে জানিয়েছেন বিমা খাতসংশ্লিষ্টরা। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে ধ্বংস করার এমন নীলনকশা বাস্তবায়নে জড়িত থাকার জন্য আইডিআরএ চেয়ারম্যানের এমন প্রশাসক নিয়োগের নিন্দা জানিয়েছেন ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন। সম্প্রতি আইডিআরএ-এর বিরুদ্ধে প্রশাসক বাতিলের দাবিতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষস্থানীয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, কোম্পানিতে একজন অদক্ষ, অনভিজ্ঞ ও একরোখা প্রশাসক নিয়োগের কারণে গত এক মাসে কোম্পানির ব্যবসা কমেছে প্রায় ৪২ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে খুব দ্রুতই কোম্পানিটি দেউলিয়া হওয়ার পথে চলে যাবে এবং লাখ লাখ গ্রাহকের বিমা পলিসির টাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে বেকার ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার। এর মধ্যেই কোম্পানির বরখাস্তকৃত পরিচালকদের তদন্তের নামে সরিয়ে দিয়ে কোম্পানি দখলের পাঁয়তারা করছে সংশ্লিষ্ট ষড়যন্ত্রকারী মহলটি। মূলত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড মেম্বারদের পুনর্বহাল ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একজন দক্ষ, নিরপেক্ষ অবজারভার নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান ও এর ৮ লাখ গ্রাহকের আমানত নিরাপদ করার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সেই সঙ্গে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তেরও দাবি জানান তারা। তবে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও একাধিক সফল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ভেঙে দেওয়া ও তুলনামূলকভাবে বিমা দাবি মেটাতে অক্ষম ও দুর্নীতিপরায়ণ বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবৈধ সুবিধা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্স ও সান লাইফ ইন্সুরেন্সের মতো আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব ষড়যন্ত্রকারী মহলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী ও তার ছেলে মহসীনুল বারী শাকির। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কোম্পানিটির হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী অনশনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

লাগামহীন দুর্নীতি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের, ধ্বংস করে দিচ্ছেন একের পর এক বিমা প্রতিষ্ঠান !

আপডেট সময় : ১২:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি ও সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে একাধিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধি করছেন বলে ভুক্তভোগী কোম্পানির লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে।

মূলত বিমা খাতকে রক্ষা ও শৃঙ্খলিত করার জন্য বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইডিআরএ গঠিত হয়। সেই রক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রধানই যখন ভক্ষকরূপে আবির্ভূত হয় তখন গোটা বিমা খাতই হুমকির মুখে পড়ে যায় বলে দাবি করেছেন বিমাসংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য প্রশাসক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে ১৩টি গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার জন্যই নিযুক্ত হয়েছেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি অথবা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ওঠে, তাহলে সেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট কিছু ধাপ রয়েছে। যেহেতু বিমা প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি, সেহেতু এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আগে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন বিসাকের মতামত নেওয়ার দরকার ছিল। সেই সঙ্গে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকলে বিএফআইইউকেও অবহিত করা দরকার ছিল। সবচেয়ে বড় কথা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব ডিরেক্টরের কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেওয়া কিংবা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে রাতারাতি বোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের ঘটনা নজিরবিহীন। অভিযোগ রয়েছে, আইডিআরএ চেয়ারম্যান কেবল প্রশাসক নিয়োগ দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত কর্মীদের অদলবদল- ছাঁটাই হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এটিও

প্রজন্মের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অনুমোদন পেয়েছিল, এর মধ্যে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের সুযোগ্য নেতৃত্বে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গ্রাহক দাবি নিষ্পত্তি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ দাবি- দাওয়া পরিশোধের অনন্য নজির স্থাপন করে আসছিল। কিন্তু এই সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ও দুর্নীতির চেষ্টায় সুবিধা গ্রহণ করতে না পেরে একটি মহল প্রতিষ্ঠানটির পেছনে লাগে। মূলত সেই মহলটি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ তোলে। সেই অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই না করে, পরিচালনা পর্ষদের কাছে ব্যাখ্যা না চেয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে আইডিআরএ চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানে একজন অনভিজ্ঞ প্রশাসক নিয়োগ করেছেন। এই প্রশাসক মূলত ষড়যন্ত্রকারী
কর্মকর্তারা।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১১ বছর সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অসাধু কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের মুখে। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গ্রাহক দাবি নিষ্পত্তি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ দাবি-দাওয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে দেশের অন্য যে কোনো কোম্পানির চেয়ে অনেকগুণ এগিয়ে। প্রায় ৩০,০০০ মাঠকর্মীর ১১ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৮ লক্ষাধিক পলিসি গ্রাহক তৈরির মাধ্যমে সাফল্যের অনন্য দিগন্তে পৌঁছে যাচ্ছিল। ঠিক তখন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রাক্তন সি.ই.ও মীর রাশেদ বিন আমান একদল স্বার্থান্বেষী মহলের সহযোগিতায় নিজের আর্থিক লাভ, জাল-জালিয়াতি ও অনৈতিক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সোনালী লাইফের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বিজিএমই- এর সাবেক সভাপতি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও প্রতিষ্ঠান দখল করার পরিকল্পনা করে। এ লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা তথা আইডিআরএ-এর চেয়ারম্যানকে হাত করে ষড়যন্ত্রকারীরা। সরাসরি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় কোম্পানি ও এর মাঠকর্মীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের লক্ষ্যে গত ২১ এপ্রিল একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য যিনি ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ ও কোম্পানির মৌলিক ভিত্তি তথা ব্যবসা ও এর কর্মীদের

দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা বলে জানিয়েছেন বিমা খাতসংশ্লিষ্টরা। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে ধ্বংস করার এমন নীলনকশা বাস্তবায়নে জড়িত থাকার জন্য আইডিআরএ চেয়ারম্যানের এমন প্রশাসক নিয়োগের নিন্দা জানিয়েছেন ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন। সম্প্রতি আইডিআরএ-এর বিরুদ্ধে প্রশাসক বাতিলের দাবিতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষস্থানীয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, কোম্পানিতে একজন অদক্ষ, অনভিজ্ঞ ও একরোখা প্রশাসক নিয়োগের কারণে গত এক মাসে কোম্পানির ব্যবসা কমেছে প্রায় ৪২ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে খুব দ্রুতই কোম্পানিটি দেউলিয়া হওয়ার পথে চলে যাবে এবং লাখ লাখ গ্রাহকের বিমা পলিসির টাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে বেকার ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার। এর মধ্যেই কোম্পানির বরখাস্তকৃত পরিচালকদের তদন্তের নামে সরিয়ে দিয়ে কোম্পানি দখলের পাঁয়তারা করছে সংশ্লিষ্ট ষড়যন্ত্রকারী মহলটি। মূলত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড মেম্বারদের পুনর্বহাল ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একজন দক্ষ, নিরপেক্ষ অবজারভার নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান ও এর ৮ লাখ গ্রাহকের আমানত নিরাপদ করার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সেই সঙ্গে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তেরও দাবি জানান তারা। তবে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও একাধিক সফল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ভেঙে দেওয়া ও তুলনামূলকভাবে বিমা দাবি মেটাতে অক্ষম ও দুর্নীতিপরায়ণ বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবৈধ সুবিধা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্স ও সান লাইফ ইন্সুরেন্সের মতো আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব ষড়যন্ত্রকারী মহলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী ও তার ছেলে মহসীনুল বারী শাকির। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কোম্পানিটির হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী অনশনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।