গত রোববার (১০ মার্চ) সকালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। মরদেহের গায়ে ছিল অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। তবে এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
ওই দিনই নিউমার্কেট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ওমর বাদী হয়ে দায়ের করেন হত্যা মামলা। তদন্তের দায়িত্ব পান আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) পাভেল আহমেদ। এরপর টানা ৩৬ ঘণ্টা অনুসন্ধান ও নিরবচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত মো. হোসেনকে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত রোববার (১০ মার্চ) সকালে এলিফ্যান্ট রোডে ফুটপাতের ওপর একজনের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে এমন খবর পায় নিউ মার্কেট থানা পুলিশ।তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ওমরকে পাঠানো হয়।
তিনি উপস্থিত হয়ে রক্তাক্ত মরদেহ পেয়ে ঠিকানা শনাক্তের চেষ্টা করেন। তবে তার ঠিকানা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। শুধুমাত্র একজন ভাসমান ব্যক্তি জানান নিহতের নাম মাপুন ওরফে কাটা মাপুন ও ব্লেড মাপুন। প্রায় ৩ বছর ধরেই তিনি (নিহত মাপুন) এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় ভাসমান হিসেবে বসবাস করছেন।
ওসি আমিনুল বলেন, উপায় না পেয়ে আমরা সিআইডির ক্রাইম সিন টিমের শরণাপন্ন হই। তারা এসে নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে নাম-ঠিকানা বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে মৃতের পরিচয় শনাক্তের সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ওমর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয় নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পাভেল আহমেদকে। তিনি মামলার দায়িত্বভার নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করেন। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন।
একপর্যায়ে দেখা যায়, ওইদিন ভোর ৫টা ১৯ মিনিটের দিকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি বাটা সিগন্যাল ক্রসিং থেকে কাঁটাবন ক্রসিংয়ের দিকে হেঁটে গিয়ে নিহত মামুনকে কোন একটা ভারী বস্তু দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে দ্রুত চলে যায়। পরে রিকশায় করে ঘাতক হাতিরপুলের দিকে চলে যান। এর ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বিভিন্ন স্থাপনা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন এবং বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ান।
তিনি বলেন,ঘাতকের চেহারা পর্যালোচনা করে এবং গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৩৬ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করা হয়। সবশেষ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মো. হোসেনকে মগবাজারের ইস্কাটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।