ঢাকা ০১:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শত,শত কৃষকের স্বপ্ন।।নষ্ট হয়ে গেছে কোটির টাকার মতো ফসল

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ৩২৪৪ বার পড়া হয়েছে

আকিকুর রহমান রুমন:-হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অতি-ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শত,শত কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল আমন ধান সহ নানান জাতের শাক-সবজির জমি।এতে করে নষ্ট হয়ে গেছে কোটির মতো ফসল।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বেশির ভাগ পরিবার কৃষির উপর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
ধান,ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি চাষাবাদ করা ফসলের অন্যতম। কম খরচে চাষাবাদ হওয়ায় আমন ধান কৃষকের বড় স্বপ্নের ফসল।
এই ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি গুলো সরজমিন পরিদর্শন করে দেখাযায়,
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা জুড়ে চাষ করা হয়েছে সোনলী আমন ধান ও বিভিন্ন প্রজাতির শাক সবজির ফসল।কৃষকের স্বপ্নের সেই ফসল আমন ধান মধ্য বয়সী হতেই ভারি বৃষ্টির পানিতে ডুবেছে।
এক নাগালে ভারি বৃষ্টি হওয়ার কারনে, এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে আমন ক্ষেতের পানি যেন নামছে না।ফলে টানা ২/৩ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে ক্ষেতের ধান চাড়া,ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি ফসল। দীর্ঘ সময় পানিতে ডুবে থাকলে একেবারে পচে নষ্ট হয়ে যাবে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। উপজেলার অধিকাংশ আমন ক্ষেত এখন পর্যন্ত পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।
কৃষক আব্দল মান্নান বলেন,শুধু আমার আমন ক্ষেত নয়, পুরো এলাকার সবার ক্ষেত আজ ৩ দিন ধরে ডুবে আছে।কিন্তু এরই মধ্যে আমন ধান গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে। কের প্রতি জমিতে প্রতিবছর ১৪/১৫ মণ করে ধান পাই।আমন চাষে সেচ খরচ নেই। তাই ফলন কম হলেও বেশ লাভ হয়।তবে এবার উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা বাড়িতে চিড়া মুড়ি খাওয়ার মতোও ধান আসবে না।
কৃষক আনোয়ার মিয়া খুব আক্ষেপ করে বলেন,আমার আট(৮)কের আমন ধানি জমির সব গুলো পানিতে ডুবে গেছে, যা নতুন করে রোপন করার আর কোনো সুযোগ নাই।বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে আমন ধান ক্ষেত। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই কম।তাই নদীতে পানি নামছে খুবই ধীর গতিতে।ফলে আমন ধানগাছ পচে নষ্ট হচ্ছে।
এব্যাপারে কৃষক সাদিকুর রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ করে ৬কের কৃষি করেছিলেন তিনি,স্বপ্ন ছিলো মায়ের চিকিৎসা,ছোট্ট বোনের বিয়েসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম করবেন এই কৃষিটুকু সুন্দর ভাবে তুলার পর।
কিন্তু দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে একেবারেই তলিয়ে গেছে তার সবকিছু।
সাথে সাথে স্বপ্নটুকুও তার নিমিষেই বিলীন হয়ে গেছে।
তাই তিনি মাননীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও কৃষি অধিদপ্তরের লোকজনের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার মতো এমন শত,শত কৃষকের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাওয়া কৃষকগনের পাশে যেন দাঁড়িয়ে তাদেরকে পুনঃরায় বাচার স্বপ্নটুকু জাগিয়ে তুলে পাশে থাকেন।
এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বানিয়াচং উপজেলার প্রায় এক হাজার সত্তর(১০৭০) হেক্টর আমন ধানি ফসলি জমি ও পঞ্চাশ (৫০)হেক্টর সবজি জমি আক্রন্ত হয়েছে। নষ্ট হওয়া ক্ষেতে নতুন করে আমন রোপণ করার সুযোগ নেই। তাই এসব জমিতে আগাম ভুট্টাসহ সবজি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সিলেট বিভাগের সচিব মহোদয়ের সেমিনারে বানিয়াচং উপজেলার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য পুর্ণবাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি,এবং যে সব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে ক্ষেত ডুবে আছে। সেই সব এলাকায় কৃষি অফিসাররা তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শত,শত কৃষকের স্বপ্ন।।নষ্ট হয়ে গেছে কোটির টাকার মতো ফসল

আপডেট সময় : ০৫:৩০:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

আকিকুর রহমান রুমন:-হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অতি-ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শত,শত কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল আমন ধান সহ নানান জাতের শাক-সবজির জমি।এতে করে নষ্ট হয়ে গেছে কোটির মতো ফসল।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বেশির ভাগ পরিবার কৃষির উপর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
ধান,ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি চাষাবাদ করা ফসলের অন্যতম। কম খরচে চাষাবাদ হওয়ায় আমন ধান কৃষকের বড় স্বপ্নের ফসল।
এই ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি গুলো সরজমিন পরিদর্শন করে দেখাযায়,
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা জুড়ে চাষ করা হয়েছে সোনলী আমন ধান ও বিভিন্ন প্রজাতির শাক সবজির ফসল।কৃষকের স্বপ্নের সেই ফসল আমন ধান মধ্য বয়সী হতেই ভারি বৃষ্টির পানিতে ডুবেছে।
এক নাগালে ভারি বৃষ্টি হওয়ার কারনে, এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে আমন ক্ষেতের পানি যেন নামছে না।ফলে টানা ২/৩ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে ক্ষেতের ধান চাড়া,ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি ফসল। দীর্ঘ সময় পানিতে ডুবে থাকলে একেবারে পচে নষ্ট হয়ে যাবে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। উপজেলার অধিকাংশ আমন ক্ষেত এখন পর্যন্ত পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।
কৃষক আব্দল মান্নান বলেন,শুধু আমার আমন ক্ষেত নয়, পুরো এলাকার সবার ক্ষেত আজ ৩ দিন ধরে ডুবে আছে।কিন্তু এরই মধ্যে আমন ধান গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে। কের প্রতি জমিতে প্রতিবছর ১৪/১৫ মণ করে ধান পাই।আমন চাষে সেচ খরচ নেই। তাই ফলন কম হলেও বেশ লাভ হয়।তবে এবার উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা বাড়িতে চিড়া মুড়ি খাওয়ার মতোও ধান আসবে না।
কৃষক আনোয়ার মিয়া খুব আক্ষেপ করে বলেন,আমার আট(৮)কের আমন ধানি জমির সব গুলো পানিতে ডুবে গেছে, যা নতুন করে রোপন করার আর কোনো সুযোগ নাই।বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে আমন ধান ক্ষেত। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই কম।তাই নদীতে পানি নামছে খুবই ধীর গতিতে।ফলে আমন ধানগাছ পচে নষ্ট হচ্ছে।
এব্যাপারে কৃষক সাদিকুর রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ করে ৬কের কৃষি করেছিলেন তিনি,স্বপ্ন ছিলো মায়ের চিকিৎসা,ছোট্ট বোনের বিয়েসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম করবেন এই কৃষিটুকু সুন্দর ভাবে তুলার পর।
কিন্তু দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে একেবারেই তলিয়ে গেছে তার সবকিছু।
সাথে সাথে স্বপ্নটুকুও তার নিমিষেই বিলীন হয়ে গেছে।
তাই তিনি মাননীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও কৃষি অধিদপ্তরের লোকজনের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার মতো এমন শত,শত কৃষকের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাওয়া কৃষকগনের পাশে যেন দাঁড়িয়ে তাদেরকে পুনঃরায় বাচার স্বপ্নটুকু জাগিয়ে তুলে পাশে থাকেন।
এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বানিয়াচং উপজেলার প্রায় এক হাজার সত্তর(১০৭০) হেক্টর আমন ধানি ফসলি জমি ও পঞ্চাশ (৫০)হেক্টর সবজি জমি আক্রন্ত হয়েছে। নষ্ট হওয়া ক্ষেতে নতুন করে আমন রোপণ করার সুযোগ নেই। তাই এসব জমিতে আগাম ভুট্টাসহ সবজি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সিলেট বিভাগের সচিব মহোদয়ের সেমিনারে বানিয়াচং উপজেলার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য পুর্ণবাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি,এবং যে সব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে ক্ষেত ডুবে আছে। সেই সব এলাকায় কৃষি অফিসাররা তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।