র্যাব-৪ খুন, ডাকাতি, দস্যুতা, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেফতার এবং জঙ্গীবাদের মত ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূল ও রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার সহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরুন সমাজকে রক্ষা করার জন্য র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল ২০২৩ এবং ২৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা জেলার আশুলিয়ার নবারটেক এলাকায় দুটি পৃথক অভিযান পরিচালনা করে কিশোর গ্যাং সদস্য অনিক (২০) ও জোবায়ের (১৯)’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
বিগত ০৪ জুলাই ২০২২ তারিখ সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকার কাইচ্চাবাড়ি গ্যাং এবং গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং স্থানীয় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঐসময় উক্ত মাঠে ভিকটিম লিখন তার পরিচিত অপর ভিকটিম মেহেদী’কে মারতে দেখে এগিয়ে গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করলে উল্লেখিত গ্রুপের কিশোর গ্যাং সদস্যরা মেহেদীর সাথে ভিকটিম লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামীদের সঙ্গে থাকা লোহার রডের আঘাতে ভিকটিম লিখন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে কিশোর গ্যাং সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় জনগণ গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমদ্বয়’কে উদ্ধার করে লিখন’কে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এবং অপর ভিকটিম মেহেদী’কে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। উল্লেখ্য ভিকটিম লিখন গত ০৫ জুলাই ২০২২ তারিখ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের চাঁচা শরীফুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় আসামী রনি, এনায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। অতঃপর র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আসামী ১। মোঃ রনি @ মামা রনি (১৮), ২। মোঃ জিলানী (১৮), ৩। মোঃ সোহাগ (১৯), এবং ৪। রাকিব (১৮)’দের’কে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে। পুলিশ হেফাজতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লিখন হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে মাঠ পর্যায়ে র্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দলের নজরদারি চলমান থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ইং ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ইং র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া থানাধীন নবারটেক এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে লিখন হত্যাকান্ডে অন্যতম সক্রিয় অংশগ্রহনকারী নিম্নোক্ত পলাতক আসামীদ্বয়’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী অনিক এবং জোবায়ের, লিখন হত্যাকান্ডে তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং ধৃত আসামীরা আরো জানায় যে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছুদিন পূর্ব হতে গোচারটেক কিশোর গ্যাং গ্রুপ ও কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং গ্রুপ তথাপি লিখন গ্রুপ ও রনি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। চলমান এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে লিখন হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়।গ্রেফতারকৃত কিশোর অপরাধীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।