ঢাকা ০৪:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

জানে আলম মুনশীর চার পর্বের মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত গল্প -শিউলি ফুল

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৫:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩
  • ৩৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেসে আসছে। কাল রাত ফর্সা হতে শুরু করেছে। আশপাশের মানুষের ছোটাছুটির আওয়াজ পাওয়া যায়। এবার হয়তো একটা খোঁজ পাওয়া যাবে হাবিলদার নুর ইসলামের। শিউলী আবার বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। খানিকটা যাওয়ার পর শিউলী দেখে কয়েকটা পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে বেডিং পত্র নিয়ে অন্ধকারে পালিয়ে ঢাকা ছাড়ছে। সেই বহরে আঙ্গুরার মাকেও দেখা গেল। আঙ্গুরার মা এগিয়ে এসে শিউলীকে তাদের সাথে পালাতে বলল। হঠাৎ সে দেখে পিছন থেকে হাবিলদার মোস্তফা তাকে ইশারায় ডাকছে। কিছুটা হলেও আশার আলো দেখে শিউলী। কেবল মোস্তফা ভাই পারে তার খবর বের করতে। দ্রæত মোস্তফার কাছে ছুটে আসে সে।
– কিছু জানতে পারলেন ভাই? মোস্তফা চুপ।
– চুপ থাকবেন না, কথা বলেন আপনার ভাইর কোন খবর পেলেন?
– ভাইর খবর নাই। তবে দেশের খবর খুব খারাব।
– কি হইছে খুলে বলেন।
– পাকিস্তানী মিলেটারীরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুমান্ত মানুষের উপরে আক্রমণ করেছে। শতশত মানুষ মারা গেছে। বিভিন্ন মহল্লায় ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ঢুকে পড়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের ঢাকা ছাড়তে হবে তানা হলে আমরাও মারা পড়ব।
হাবিলদার মোস্তফা কামালের কথাগুলো শোনার পর- আরো অস্থির হয়ে পড়ে শিউলি। কি করবে সে বুঝে উঠতে পারছে না। কোথায় হাবিলদার নুর ইসলাম। কোথায় তার দুধের শিশু! কোথায় যাবে পালিয়ে ? এরকম একটা পরিস্থতিতে কি করা উচিত জানা নাই শিউলির।
মোস্তফার কথায় দ্বিমত পোষন করে শিউলী মোস্তফাকে জানিয়ে দিল-নুর ইসলামকে রেখে সে কোথাও যাবে না। নানান কথার জালে শিউলীকে বুঝাতে চেষ্টা করলো মোস্তফা ও তার স্ত্রী ময়না কিন্তু কোন কথাই তাকে শান্তনা দিতে পারলো না। বরং এবার প্রকাশ্যে অশ্রæ ঝরাতে শুরু করল শিউলী।
চার দিকে একটা আতংকিত ভাব। মানুষজন দিক-বেদিক ছোটাছুটি করছে। শিউলিদের বাড়িওয়ালা ও ঘরবাড়ি তালা দিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করছে। আশপাশের পরিচিত অনেকেই ঘর বাড়ি ছাড়ছে। কিন্তু শিউলী তার সিদান্তে অনড়, নুর ইসলাম বাসায় না আশা পর্যন্ত সে বাসা ছাড়বে না। এতে মিলেটারীরা যদি ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়-দেক। ঘরে আটকা পড়ে যদি পুড়তে হয়, পুড়ে মরবে, তবওু নুর ইসলামকে ছাড়া ঘর ছাড়বে না শিউলী।
এখন শিউলির চারদিকে শূন্য হা-হাকার। (অসমাপ্ত)

লেখক: জানে আলম মুনশী।
পুলিশ অফিসার।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

জানে আলম মুনশীর চার পর্বের মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত গল্প -শিউলি ফুল

আপডেট সময় : ০৪:৫৫:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেসে আসছে। কাল রাত ফর্সা হতে শুরু করেছে। আশপাশের মানুষের ছোটাছুটির আওয়াজ পাওয়া যায়। এবার হয়তো একটা খোঁজ পাওয়া যাবে হাবিলদার নুর ইসলামের। শিউলী আবার বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। খানিকটা যাওয়ার পর শিউলী দেখে কয়েকটা পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে বেডিং পত্র নিয়ে অন্ধকারে পালিয়ে ঢাকা ছাড়ছে। সেই বহরে আঙ্গুরার মাকেও দেখা গেল। আঙ্গুরার মা এগিয়ে এসে শিউলীকে তাদের সাথে পালাতে বলল। হঠাৎ সে দেখে পিছন থেকে হাবিলদার মোস্তফা তাকে ইশারায় ডাকছে। কিছুটা হলেও আশার আলো দেখে শিউলী। কেবল মোস্তফা ভাই পারে তার খবর বের করতে। দ্রæত মোস্তফার কাছে ছুটে আসে সে।
– কিছু জানতে পারলেন ভাই? মোস্তফা চুপ।
– চুপ থাকবেন না, কথা বলেন আপনার ভাইর কোন খবর পেলেন?
– ভাইর খবর নাই। তবে দেশের খবর খুব খারাব।
– কি হইছে খুলে বলেন।
– পাকিস্তানী মিলেটারীরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুমান্ত মানুষের উপরে আক্রমণ করেছে। শতশত মানুষ মারা গেছে। বিভিন্ন মহল্লায় ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ঢুকে পড়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের ঢাকা ছাড়তে হবে তানা হলে আমরাও মারা পড়ব।
হাবিলদার মোস্তফা কামালের কথাগুলো শোনার পর- আরো অস্থির হয়ে পড়ে শিউলি। কি করবে সে বুঝে উঠতে পারছে না। কোথায় হাবিলদার নুর ইসলাম। কোথায় তার দুধের শিশু! কোথায় যাবে পালিয়ে ? এরকম একটা পরিস্থতিতে কি করা উচিত জানা নাই শিউলির।
মোস্তফার কথায় দ্বিমত পোষন করে শিউলী মোস্তফাকে জানিয়ে দিল-নুর ইসলামকে রেখে সে কোথাও যাবে না। নানান কথার জালে শিউলীকে বুঝাতে চেষ্টা করলো মোস্তফা ও তার স্ত্রী ময়না কিন্তু কোন কথাই তাকে শান্তনা দিতে পারলো না। বরং এবার প্রকাশ্যে অশ্রæ ঝরাতে শুরু করল শিউলী।
চার দিকে একটা আতংকিত ভাব। মানুষজন দিক-বেদিক ছোটাছুটি করছে। শিউলিদের বাড়িওয়ালা ও ঘরবাড়ি তালা দিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করছে। আশপাশের পরিচিত অনেকেই ঘর বাড়ি ছাড়ছে। কিন্তু শিউলী তার সিদান্তে অনড়, নুর ইসলাম বাসায় না আশা পর্যন্ত সে বাসা ছাড়বে না। এতে মিলেটারীরা যদি ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়-দেক। ঘরে আটকা পড়ে যদি পুড়তে হয়, পুড়ে মরবে, তবওু নুর ইসলামকে ছাড়া ঘর ছাড়বে না শিউলী।
এখন শিউলির চারদিকে শূন্য হা-হাকার। (অসমাপ্ত)

লেখক: জানে আলম মুনশী।
পুলিশ অফিসার।