গত ৮ মার্চ ২০২২ ইং অত্র মামলার বাদী এস.আই আপন কুমার মজুমদার সঙ্গীয় ফোর্সসহ থানা এলাকায় ডিউটিকরা কালীন থানার বেতার মারফত প্রাপ্ত সংবাদ এর ভিত্তিতে শ্রীনগর থানাধীন ব্রাহ্মন পাইকশা সাকিনস্থ জনৈক আদিল ও জামাল বেপারীর বাড়ীর মধ্যবর্তী জনৈক শাহাদাত হোসেন নাসিরের মালিকানাধীন পানিযুক্ত জমিতে উপস্থিত হয়ে লেপ দিয়ে মোড়ানো ও প্রিন্টের বিছানার চাদর দিয়ে বাধা অবস্থায় অজ্ঞাতনামা একজন মহিলা (বয়স অনুমান ২২ বছর) ও অজ্ঞাতনামা মেয়ে শিশু (বয়স অনুমান ০১ বছর) এর মৃতদেহ দেখতে পান এই সংক্রান্তে এস.আই আপন কুমার মজুমদার বাদী হয়ে শ্রীনগর থানার মামলা গত ১০ মার্চ ২২ ইং একটি মামলা দায়ের করেন ।ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড মামলা নং-১৩।
শ্রীনগর থানার ব্রাহ্মন পাইকশা সাকিনে বহুল আলোচিত মা মেয়ে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন আসামী গ্রেফতার করল পিবিআই, মুন্সীগঞ্জ জেলা।মামলার ঘটনর সাথে জড়িত আসামী শাহিন পাহাড় (৩২)কে ইং ২৩ মার্চ ২০২৩ তারিখ সকাল ০৬. ঘটিকার সময় ডিএমপি, কদমতলী থানাধীন ১৫০ মুরাদপুর মাদ্রাসা রোড, জনৈক মোঃ মজিবুর রহমানের বাড়ির নিচ তলার উত্তর পার্শ্বের রুম হতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলাটি শ্রীনগর থানা পুলিশ তদন্তকরা কালিন সময়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার আদেশে অত্র মামলাটি পিবিআই কর্তৃক তদন্তের নির্দেশ হওয়ায় পিবিআই, মুন্সীগঞ্জ জেলা গত-২৫ এপ্রিল ২০২২ ইং মামলার তদন্তভার গ্রহন করে।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই, প্রধান বনজ কুমার মজুমদার,এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও সার্বিক নির্দেশনায় এবং মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক পুলিশ সুপার, পিবিআই, মুন্সীগঞ্জ এর তদারকিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শাহীনূর আলম মামলাটি তদন্ত করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামী শাহিন পাহাড় (৩২)’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, তার প্রথম স্ত্রী নার্গিস কে বিয়ের পর তাকে না জানিয়ে অত্র মামলার ভিকটিম রিম্পা খাতুন কে বিয়ে করে শ্রীনগর থানাধীন মধ্য কামারগাঁও সাকিনে আলাদা বাসা ভাড়া করে বসাবাস করতে থাকে। আসামীর ঔরষে এবং ভিকটিম রিম্পা খাতুনের গর্ভে কন্যা সন্তান ভিকটিম আমেনা (০৯ মাস) জন্ম গ্রহন করে। আসামীর প্রথম স্ত্রী নার্গিস আসামীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে আসামীর সাথে মনোমালিন্য ও ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়।
এরপর আসামী শাহিন পাহাড় তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিম্পা খাতুনকে গ্রামের বাড়ি পাবনাতে চলে যেতে বলে, কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আসামী শাহিন পাহাড় রাগের বশবর্তী হয়ে প্রথমে রিম্পা খাতুনকে দুই হাত দিয়ে নাক, মুখ, গলা চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। পরে তার ০৯ মাস বয়সী মেয়ে আমেনা খাতুনকে একইভাবে হত্যা করে ভিকটিম দ্বয়ের মৃতদেহ দুইটি লেপ দিয়ে মুড়িয়ে ও প্রিন্টের বিছানার চাদর দিয়ে বেঁধে বাসা তালা দিয়ে উত্তর বালাশুর নিজ বাড়িতে প্রথম স্ত্রীর কাছে চলে আসে এবং পুনরায় ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে আসামী তার একই এলাকার মিশুক চালক হাসেম (৩০) এর সাথে দেখা হয় এবং তার কাছে হত্যাকান্ডের ঘটনা গোপন করে কুমারপাড়া সাকিন হতে কিছু লেপ তোশক আনবে মর্মে তার মিশুক ভাড়ায় ঠিক করে রাত্র অনুমান ২১.ঘটিকার সময় রওনা হয়।
সংঘটিত হত্যার ঘটনাস্থলে পার্শ্বে রাস্তায় উপস্থিত হয়ে মিশুকটি রাস্তায় রেখে আসামী একাকী ঘটনাস্থল চৌচলা টিনশেড ঘর হতে পূর্বেই লেপ দিয়ে ভিকটিম দ্বয়ের মৃত দেহ মোড়ানো ও প্রিন্টের বিছানার চাদর দিয়ে বাধা অবস্থায় রাত্র অনুমান ২২.০০ ঘটিকার সময় পাজাকোলে করে নিয়ে এসে মিশুকে উঠায় এবং মিশুকে চালককে বুঝুতে না দিয়ে তাকে কোলাপাড়ার দিকে যেতে বলে। অতঃপর ব্রাহ্মন পাইকশা (এজাহারে বর্নিত ঘটনাস্থলে) এলাকায় পৌঁছালে আসামী মিশুক চালককে মিশুক থামাতে বলে এবং তাকে লেপ চাদর বাসায় নিয়ে লাভ নাই এই বলে আসামী লেপ দিয়ে মোড়ানো ও প্রিন্টের বিছানার চাদর দিয়ে বাধা ভিকটিম দ্বয়ের লাশ পানিযুক্ত জমিতে ফেলে দিয়ে তার নিজ বাড়িতে চলে যায়।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার পিবিআই এর পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক জানান যে, সূত্রোক্ত মামলায় ঘটনায় আসামী শাহিন পাহাড় (৩২),গ্রেফতারকৃত আসামী শাহিন পাহাড় (৩২) কে অদ্য-২৩ মার্চ ২০২৩ ইং বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।