আবদুল মামুন,সীতাকুণ্ড-
সারাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন কোটা বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনকারী আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টার সময় উপজেলার কুমিরাস্থ আইআইইউসির সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এ অবরোধ করেন। এ সময় তারা সরকারী চাকুরীতে কোটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। একই সময় তারা রেলপথও অবরোধ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারীদের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধেরে কারণে মহাসড়কে ৪ ঘণ্টা যানচলাচলা এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় মহাসড়কের উভয়দিকে অন্তত ৬০ কিলোমিটার যানজট লেগে চরম দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে কোটা বিরোধী আন্দোলকারীদের সরিয়ে দিতে ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপ বাঁধা দিতে আসলে আন্দোলনকারীরা তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি দেয়। বেশ কিছুক্ষণ উভয়ের মধ্যে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। অবরোধ চলাকালে শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড সার্কেল), এবিএম নায়হানুল বারী, সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল উদ্দিন পিপিএমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে সৃষ্টি হয়েছে অন্তত ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট। বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খোকন চন্দ্র ঘোষ বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে নামা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুরুতেই রেলপথ অবরোধ করেন। এরপর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় গেটসংলগ্ন চট্টগ্রামমুখী সড়ক অবরোধ করেন। এতে আটকা পড়ে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন। মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী সড়ক অবরোধের ঘণ্টাখানেক পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকামুখী সড়কে অবস্থান নেন। এতে ঢাকামুখী সড়কে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বেলা দেড়টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করলে তাঁরা ঢাকামুখী সড়ক থেকে সরে গেছে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। বেলা দেড়টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষকসহ তাঁরা পুনরায় বুঝিয়ে শান্ত করলে তাঁরা চট্টগ্রামমুখী সড়ক থেকে সরে যান। এরপর ধীরে ধীরে চট্টগ্রামমুখী সড়কেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে নামা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুঁটে আসি। সেখানে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অবরোধের চার ঘণ্টা পর তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকামুখী সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি আটকে পড়া দূরপাল্লার শত শত যানবাহন তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিক্ষোভে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।