নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত মহান জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারী সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিল। এসব প্রতারক সাধারণ মানুষদের সংসদ ভবনের সচিব এর ভূয়া নাম পরিচয় দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে বলে জানা যায়। এ চক্রটি পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারনা করে আসছে। তারা মূলত সমাজের অশিক্ষিত ও অল্প শিক্ষিত সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে আসছে মর্মে ডিএমরির শেরে বাংলা নগর থানায় গত ৮ জানুয়ারি ২৩ ইং ভুক্তভোগী ফারুকুল ইসলাম নিজে বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করেন।মামলায় এক নাম্বার আসামী খোরশেদ আলম,মামুন,জাহাঙ্গীর আলম ও মোফাজ্জল হোসেন’কে উক্ত মামলার আসামী করেন।
মামলা দায়ের হওয়ার প্রেক্ষিতে এই ধরনের প্রতারকদের আইনের আওতায় আনতে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিসি)আজিমুল হকের সার্বিক দিক নির্দেশনায় শেরে বাংলা থানার অফিসার ইনচার্জ উৎপল বড়ুয়ার সার্বিক তত্তাবধানে এসআই মনির হোসাইন এর সুযোগ্য নেতৃত্বে ও তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উক্ত মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করেন।মামলা হওয়ার পরপর প্রতারক চক্রটি তাদের ব্যবহারকৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।
তারাই ধারাবাহিকতায় গত ৬ ডিসেম্বর ২২ ইং ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উক্ত মামলার এজেহার ভুক্ত আসামী আসামী মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ান (৬৫)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিএমপি
শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।
এই বিষয়ে ডিএমপি শেরে বাংলা নগর থানার এসআই মনির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন,রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত মহান জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারী সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিল, একজন ভুক্তভোগীর মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি যে,সরকারী পিএস মামুন ফারুকুল ইসলাম এর নামে প্রতারণা চক্রের আরেক সদস্য এ্যাডভোকেট পরিচয়ধারী জাহাঙ্গীর আলম এর মাধ্যমে একটি বায়নানামা দলিল সম্পাদন করে প্রতারক চক্রের সদস্য জমির মালিক মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ান কে ফারুকুল ইসলাম নগদ ৮,০০,০০০/= (আট লক্ষ) টাকা ও ২ (দুই) লক্ষ টাকার চেক প্রদান করে।দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর সে তাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন নম্বর বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্রটি।
তাদের প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১ টি এক্স নোয়া মাইক্রোবাস সহ প্রতারকের স্বীকারোক্তি মতে ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কাশিমপুর এলাকায় হতে গাড়ীর চালক মনোয়ার হোসেন(৩২)কে ও প্রতারনায় ব্যবহার হওয়া গাড়ীটি উদ্ধার করি ।প্রতারকের দখলে থাকা বাদীর চেক ও বায়না দলিল০৫ (পাঁচ) টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ১৫ (পনের) টি ১০০/= (একশত) টাকা মূল্যের লিখিত ষ্ট্যাম্প, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হই ।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়,মোঃ ফারুকুল ইসলাম একজন দলিল লেখক সহকারী। প্রায় ৬ মাস পূর্বে মামুন নামে এক লোক তাকে ফোন করে সে নিজেকে সংসদীয় মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব সাহেবের পিএস বলে পরিচয় দেয়। সে তার সচিব স্যার খোরশেদ আলম এর জন্য জমি কিনে দিতে বলে এবং তাকে কিছু টাকা লাভ দিবে। ফারুকুল ইসলাম প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা রাখে। সে সচিব এর পিএস মামুন কে প্রথম জমি দেখায়। পিএস মামুনেরও জমি পছন্দ হয়। জমির দরদাম ঠিক হয়। পরে পিএস মামুন ফারুকুল ইসলাম কে তার সচিব স্যার খোরশেদ আলম এর সাথে সংসদ এর ভিতরে দেখা করান। সচিব সাহেব খুব ব্যস্ততার ভাব নিয়ে ফারুকুল ইসলাম কে শুধু বলে যে, জমি আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমি জমি নিব। ফারুকুল ইসলামেরও তাদের কথা বিশ্বাস হয়। পরবর্তীতে পিএস মামুন পুনরায় তাকে তার সচিব এর জন্য আরো জমি ক্রয় করবে বলে। আশুলিয়ায় একটি জমি দেখেছে এবং জমিটি তার সচিব স্যারের খুব পছন্দ হয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।