অদ্য ১৮ মার্চ-২৩ ইং রাজধানীর গুলশান-৩ অভিজাত সিক্স সিজন হোটেলে সিগারেট খাতের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানীর নিম্ন স্তরের দেশীয় সিগারেটের জন্য মহান জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাশকৃত অনুমোদিত প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটের জন্য আমাদের প্রস্তাবনা।
দুপুরে সিক্স সিজন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লোকালী ওন্ড সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক নাজমুন নাহার লাকি বলেন,আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, অভ্যন্তরীণ রাজস্বের সিংহভাগ আসে মূসক খাত হতে আর এই খাতে আহরিত মোট রাজস্বের এক তৃতীয়াংশ আসছে দেশের সিগারেট খাত হতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশীয় শিল্পের বিকাশ, উৎপাদন বৃদ্ধি, রপ্তানী বহুমুখীকরণ, বেকারত্ব দূরীকরণ, শিল্প বাণিজ্যের উন্নয়নে সকল সেক্টরে ইতিবাচক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটে “Made in Bangladesh” শ্লোগানে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স, গাড়ী শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি ও অন্যান্য নতুন নতুন খাত সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পকে বিশেষ প্রণোদনা/ কর অব্যাহতি/ কর অবকাশ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে যা শুধুমাত্র দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে সিগারেট খাতে আমরাও অনুরূপ ধরণের প্রণোদনা ও স্বার্থ সংরক্ষণের নীতি সহায়তা চাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন,মাননীয় অর্থমন্ত্রী, ২০১৮-১৯ সালের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে দেশীয় কোম্পানীর স্বার্থ সংরক্ষনের জন্য নিম্নের বক্তব্য দিয়েছিলেন, ”বিদেশী ব্র্যান্ডের সিগারেট শুধুমাত্র মধ্যম এবং উচ্চ স্তরে তৈরী করা যাবে। নিম্নতম স্তরে কোন বিদেশী ব্র্যান্ড আমরা allow করব না এটা শুধুমাত্র দেশী শিল্পের জন্য দেশী ব্র্যান্ডের জন্য রিজার্ভ থাকছে।” এই বাজেট নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে ফলে শতভাগ দেশীয় শিল্প গুলো রুগ্ন থেকে রুগ্নতর হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে ইতিপূর্বে বাজেটের মাধ্যমে গৃহিত সকল সিদ্ধান্ত/ প্রস্তাব/ পদক্ষেপ সমূহ বাস্তবায়ন হয়েছে। শুধুমাত্র সিগারেট খাতে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন শিল্পের সুরক্ষার্থে এবং জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটের মাধ্যমে অনুমোদিত শুধুমাত্র এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে।
দেশের সিগারেট বাজার প্রায় ৫০,০০০ কোটি টাকার অধিক। এ খাতে সরকারের চলতি অর্থ বছরে (২০২২-২৩) রাজস্ব আহরিত হবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ খাতের ব্যবসায়িক লাভ BATB (British American Tobacco Bangladesh ) DIVIDEND হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রায় বাহিরে নিয়ে যাচ্ছে। তারা এই লাভের কোন অংশ দেশের অন্য কোন খাতে বিনিয়োগ করে না। অন্যদিকে দেশীয় কোম্পানীর লাভ দেশেই থেকে যায় এবং অন্যান্য খাতে রাজস্ব সঞ্চারী বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট নীতি কৌশল অনুযায়ী বাজারের ভারসাম্য এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিম্ন স্ল্যাব এর ব্র্যান্ড শুধুমাত্র শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানির জন্য সংরক্ষিত রেখে নিম্ন প্ল্যাব এর সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি না করে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানীগুলো অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সুযোগ দিয়ে যথোপযুক্ত পরিমাণ কর প্রদানের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।
উপরোক্ত প্রস্তাবনা অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের সিগারেট খাতে প্রাক্কলিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ দাড়াবে প্রায় ৩৭,০৫০ কোটি টাকা, যা বর্তমান অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩০% বেশি। ধূমপায়ীর সংখ্যা হ্রাস পাবে, ধূমপানজনিত জনস্বাস্থের হুমকি হ্রাস পাবে এবং রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।তাছাড়া সিগারেট খাতে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষা ও বাজারে সুষম বন্টন ব্যবস্থা আনয়নের জন্য প্রতিযোগিতা আইন-২০১২ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সু-দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তিনি।