মোঃ শহিদুল ইসলাম,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ র্যাব-৭ চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অপরহণের পর শিকল বেঁধে বন্দি রেখে মুক্তিপণ দাবি ও ইটভাটায় জোরপূর্বক শ্রম আদায়ের ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। এসময় ভুক্তভোগী দুই জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের একজন রিকশাচালক আর অন্যজন ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে র্যাব-৭ এর চাঁন্দগাও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন উপ-অধিনায়ক মেজর রেজওয়ানুর রহমান।
আটককৃতরা হলেন- ঘটনার মূলহোতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী প্রকাশ কালু চেয়ারম্যান (৬৮), মো. খোকন (৩২), মো. আলাউদ্দিন (৩৭), মো. ইউসুফ (৩৬), শহিদুল্লাহ রাজু (৩৩),মো. নাজিম (৩৬), মো. জহিরুল ইসলাম (৪৮) ও মো. সেলিম (৫১)।
মেজর রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী মো. সজিব নগরীর উত্তর হালিশহর পরিবার নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সজিব গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসা থেকে বের হয়। পরে তিনি বাসায় না ফেরায় পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করে। সন্ধান না পেয়ে সজিবের বাবা হালিশহর থানায় একটি হারানো জিডি করেন। পরদিন তার বাবার মোবাইলে ফোন করে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদার টাকা না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। সজিবের বাবা গরিব এবং চাঁদা দেয়ার মত সামর্থ না থাকায় ছেলের জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি আমাদের জানান।
পরে বুধবার দিবাগত রাত ২টা দিকে হাটহাজারী ধলই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। এক পর্যায়ে একটি ভাড়া ঘর হতে অপহৃত সজিব সঙ্গে রুবেল নামে আরও একজনকে পায়ে লোহার শিকল এবং হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে অপহরণকারী চক্রের আটজনকে গ্রেফতার করা হয়।
মেজর রেজওয়ান গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে বলেন, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন এলাকা হতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে অপহরণ করে আটকে রাখত। পরবর্তীতে তাদের পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করত এবং ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করত। ভিকটিমদের পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করার পরও ভিকটিমদের না ছেড়ে ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিত। পরবর্তীতে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত ইটভাটায় দিনে জবরদস্তিমূলকভাবে কাজ করাত এবং রাতের বেলা পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালা মেরে রাখত।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জবানবন্দি অনুযায়ী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও তিনজন পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।