ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

মেহেরপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০২:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৩৩৮৭ বার পড়া হয়েছে

মাজিদ আল মামুন মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি। সূর্য যখন যেদিকে হেলছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ছে। এ যেন হলুদের রাজ্য। চারিদিকে হলুদ ফুলের মনমাতানো রুপ।
সবুজের মধ্যে হলুদ ফুলগুলো অপরূপ সৌন্দর্যের উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে। এই দৃশ্যের সৌন্দর্য আরেকটু বাড়িয়েছে রাস্তার দুই পাশের নারিকেল গাছের সারি। এ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রজাপতি যেমন ছুটে আসছে তেমনি প্রকৃতি প্রেমীরা আসছেন দল বেঁধে। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে আসছেন তারা।
এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা মিলবে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি (বিএডিসি) ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারে। এই সৌন্দর্য কে উপভোগ করতে প্রতিদিনই আসছে শত শত দর্শনার্থী। বীজের ও ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোর জন্য সূর্যমুখীর চাষ করেছে মেহেরপুরের আমঝুপি ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারসহ স্থানীয় চাষীরা। সেখানে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে বারী-৩ জাতের সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের বাম পাশে মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউক অফিসের পরেই আমঝুপি ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারে সূর্যমুখী ফুলের হাসি সব বয়সী মানুষের নজর কেড়েছে। আর সেই নজরকাড়া ফুলের মধ্যে কেউ সেলফি, কেউ স্বজন নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছবি তুলতে ভিড় করছেন। ফুলের সৌন্দর্যকে নিজের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী করছেন এসব ভ্রমণপিপাসু মানুষ। কেউ যেন ফুল না ছেড়ে সেজন্য লোকবল নিয়োগ করতে হয়েছে খামার কর্তৃপক্ষকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সূর্যমুখী ফুলের ছবি দেখে গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। পার্শ্ববর্তী জেলার দর্শনার্থীরাও মাইক্রোবাস-কার, মোটরসাইযোগে ছুটে আসছেন।
শহর ও গ্রাম থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা গৃহবধূসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে সূর্যমুখী চাষের সময়ে ছবি তুলতে আসেন তারা। এখানে এসে ক্লান্ত মনটা ভরে গেছে বলেও জানান তারা। ফুলে-ফুলে ভরপুর জেলার একমাত্র বীজ উৎপাদনের খামারটি এখন বিনোদনের জায়গায় পরিণত হয়েছে।
ছবি তুলতে আসা চুয়াডাঙ্গার কলেজ ছাত্রী সুমাইয়া জানান, এমন মাঠজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের আর কোথাও দেখা মেলেনা। এই সৌন্দর্য কে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে বান্ধবীদের সঙ্গে ছবি তুলতে এসেছি।
গাংনী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের দর্শনার্থী মরজেম হোসেন জানান, এতো বড় সূর্যমুখীর বাগান আমি আর কোথাও দেখিনি। নিজের এলাকায় এতো সুন্দর দৃশ্য না দেখে কি আর থাকা যায়। তাই পরিবারসহ এসেছি।
খামারের উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার দেবনাথ জানান, ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখীর তেল শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোর জন্য ও স্থানীয় চাষীদের সূর্যমুখী চাষে উদ্ধুদ্ধকরণের জন্য খামারে প্রতিবছরই কমবেশি সুর্যমুখীর চাষ করা হয়। এবার পরীক্ষামূলক ভাবে সাড়ে ৪ বিঘাসহ মোট সাড়ে ১৭বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে। মাঠজুড়ে ফুলে ভরে যাওয়াতে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য সকল শ্রেণীর মানুষ এসে ছবি তোলার জন্য ভিড় করছে। মানুষের উপস্থিতি দেখে বেশ ভালো লাগছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মেহেরপুরের মাটি অত্যন্ত উর্বর হওয়ায় এ জেলার বেশির ভাগ জমিতে সূর্যমুখী চাষের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চাষীরা এই ফসল চাষ করলে তেল উৎপাদনে দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা অনেকাংশে মেটানো সম্ভব।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

মেহেরপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি

আপডেট সময় : ০২:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

মাজিদ আল মামুন মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি। সূর্য যখন যেদিকে হেলছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ছে। এ যেন হলুদের রাজ্য। চারিদিকে হলুদ ফুলের মনমাতানো রুপ।
সবুজের মধ্যে হলুদ ফুলগুলো অপরূপ সৌন্দর্যের উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে। এই দৃশ্যের সৌন্দর্য আরেকটু বাড়িয়েছে রাস্তার দুই পাশের নারিকেল গাছের সারি। এ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রজাপতি যেমন ছুটে আসছে তেমনি প্রকৃতি প্রেমীরা আসছেন দল বেঁধে। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে আসছেন তারা।
এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা মিলবে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি (বিএডিসি) ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারে। এই সৌন্দর্য কে উপভোগ করতে প্রতিদিনই আসছে শত শত দর্শনার্থী। বীজের ও ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোর জন্য সূর্যমুখীর চাষ করেছে মেহেরপুরের আমঝুপি ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারসহ স্থানীয় চাষীরা। সেখানে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে বারী-৩ জাতের সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের বাম পাশে মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউক অফিসের পরেই আমঝুপি ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারে সূর্যমুখী ফুলের হাসি সব বয়সী মানুষের নজর কেড়েছে। আর সেই নজরকাড়া ফুলের মধ্যে কেউ সেলফি, কেউ স্বজন নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছবি তুলতে ভিড় করছেন। ফুলের সৌন্দর্যকে নিজের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী করছেন এসব ভ্রমণপিপাসু মানুষ। কেউ যেন ফুল না ছেড়ে সেজন্য লোকবল নিয়োগ করতে হয়েছে খামার কর্তৃপক্ষকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সূর্যমুখী ফুলের ছবি দেখে গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। পার্শ্ববর্তী জেলার দর্শনার্থীরাও মাইক্রোবাস-কার, মোটরসাইযোগে ছুটে আসছেন।
শহর ও গ্রাম থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা গৃহবধূসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে সূর্যমুখী চাষের সময়ে ছবি তুলতে আসেন তারা। এখানে এসে ক্লান্ত মনটা ভরে গেছে বলেও জানান তারা। ফুলে-ফুলে ভরপুর জেলার একমাত্র বীজ উৎপাদনের খামারটি এখন বিনোদনের জায়গায় পরিণত হয়েছে।
ছবি তুলতে আসা চুয়াডাঙ্গার কলেজ ছাত্রী সুমাইয়া জানান, এমন মাঠজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের আর কোথাও দেখা মেলেনা। এই সৌন্দর্য কে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে বান্ধবীদের সঙ্গে ছবি তুলতে এসেছি।
গাংনী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের দর্শনার্থী মরজেম হোসেন জানান, এতো বড় সূর্যমুখীর বাগান আমি আর কোথাও দেখিনি। নিজের এলাকায় এতো সুন্দর দৃশ্য না দেখে কি আর থাকা যায়। তাই পরিবারসহ এসেছি।
খামারের উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার দেবনাথ জানান, ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখীর তেল শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোর জন্য ও স্থানীয় চাষীদের সূর্যমুখী চাষে উদ্ধুদ্ধকরণের জন্য খামারে প্রতিবছরই কমবেশি সুর্যমুখীর চাষ করা হয়। এবার পরীক্ষামূলক ভাবে সাড়ে ৪ বিঘাসহ মোট সাড়ে ১৭বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে। মাঠজুড়ে ফুলে ভরে যাওয়াতে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য সকল শ্রেণীর মানুষ এসে ছবি তোলার জন্য ভিড় করছে। মানুষের উপস্থিতি দেখে বেশ ভালো লাগছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মেহেরপুরের মাটি অত্যন্ত উর্বর হওয়ায় এ জেলার বেশির ভাগ জমিতে সূর্যমুখী চাষের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চাষীরা এই ফসল চাষ করলে তেল উৎপাদনে দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা অনেকাংশে মেটানো সম্ভব।