সাম্প্রতিক সময়ে গত ৮ ফেব্রয়ারি-২৪ ইং বৃহস্পতিবার দিনাজপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারণা চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলাম। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে সর্বমোট ৫টি মোবাইল ফোন এবং সংযুক্ত ১০ টি সিম জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত সিম গুলোর অধিকাংশই ভুয়া ব্যাক্তিদের নামে নিবন্ধিত।
'বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা যুক্ত বা এড করা যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের একাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল একটি প্রতারক চক্র।
এই ধরনের কয়েকটি ঘটনায় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং এ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে। পরবর্তিতে দিনাজপুর জেলায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে দিনাজপুর জেলা হতে গ্রেফতার করা হলেও তাদের দুজনের স্থায়ী ঠিকানাই ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় এবং সম্পর্কে তারা পরস্পর আত্মীয়। পুলিশের চোখ ফাকি দিতেই তারা দিনাজপুরে বাসা ভারা নিয়ে এই প্রতারণার কাজ করে আসছিলো।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে জানা যায় 'এ চক্রের এক সদস্য বিভিন্ন কার্ডধারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে গ্রেফতারকৃত অপরজনের কাছে পাঠায়। গ্রেফতারকৃতরা কমিউনিটি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে ভিসা এবং মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম্বারে ফোন দিয়ে তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পিন নম্বর চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট ও ইমেইল আপডেট না করার কারণে কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে মর্মে জানায়। অনেক কার্ডধারীর অ্যাকাউন্টে বড় অংকের ব্যালেন্স থাকায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে প্রতারকদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে থাকে।
'এভাবে সংগৃহীত তথ্য থেকে ১৬ ডিজিটের কার্ডের নম্বর, কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের (সিকিউরিটি পিন নম্বর) সিভিভি নম্বর সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে গ্রাহকদের কাছে ওটিপি (OTP) কোড পাঠায়। কৌশলে পাঠানো ওটিপি (OTP) কোড সংগ্রহ করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকে অ্যাড মানি' অপশনের কার্ড টু বিকাশের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে নেয় তারা।
মাস্টার কার্ড বা ভিসা কার্ড প্রতারণায় একাধিক ধাপে কয়েকটি তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন- কার্ড নাম্বার, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, নিরাপত্তা পিন নাম্বার, ওটিপি কোড ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নিজের পাসওয়ার্ড ও ওটিপি কোড কখনোই কারো সঙ্গে এমনকি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।
চেয়ারম্যানঃ-আব্দুর রহিম খান,
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো : মাসুদ রানা
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ঢাকার বার্তা ২৪