নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দক্ষিন বাড্ডার অলিগলিতে তুতু রিয়াদ এবং কুত্তা রিফাত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন কিশোর গ্যাংয় সদস্যদের অতর্কিত হামলা ও দখলবাজিতে আতংকিত হয়ে পরেছে স্থানিয় এলাকাবাসী । একসঙ্গে চলাফেরা করা কিশোররা প্রকাশ্যে অস্র নিয়ে চলে । কেউ কিছু বললেই তারা মারধর শুরু করে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের আশ্রয়ে থাকা কিশোরদের অত্যাচারে জনসাধারন অতিষ্ঠ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিন বাড্ডায় তুতু রিয়াদ ও কুত্তা রিফাত গ্রুপের হামলায় স্থানিয় গ্যারেজ ব্যবসায়ি জনি মারাত্মক আহত হয়। বাড্ডা থানায় আহত জনির মা নাজমা লিখিত অভিযোগে বলেন , বেশ কিছুদিন যাবৎ রিয়াদ , রিফাত , আরমান,সিফাত,শোভন তাদের বাহিনী সহ ২০/২৫ জন আমার একটি গ্যারেজ দখল করার পায়তারা করছে তারই ধারাবাহিকতায় ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধা ৭ টায় অবৈধ অস্র নিয়ে গ্যারেজে ঢুকে আমার ছেলে জনিকে আটকিয়ে রেখে রিক্সার ড্রাইভার শাহিন,খায়রুল,শহিদুল,
রাসেল দের লোহার রড দিয়ে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে । আমার মেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মারধর করে আহত করে । সন্ত্রাসী রিয়াদের নির্দেশে তাদের গ্রুপের একজন পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে কিন্তু গুলি লক্ষ ভেধ করে অন্যত্র চলে যায় ঘটনাস্থলে আমি সহ আশে পাশের লোকজন ডাক চিতকার করিলে তারা পালিয়ে যায় । ঘটনার পর স্থানিয় লোকজনের সহায়তায় আহতদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ।
দক্ষিন বাড্ডা, লেক পাড় , পশ্চিম মেরুল , দারোগা বাড়ি মোড় , গুদারাঘাট এই বাহিনীর বিচরণ সবচেয়ে বেশি। দক্ষিন বাড্ডার লোকজন জানায়, এখানে তুতু রিয়াদ এবং কুত্তা রিফাতের নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে এলাকার চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা সে নিয়ন্ত্রণ করে। বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আরমান ওরফে ইয়াবা আরমান, শোভন ওরফে বাবাখুর শোভন, সিফাত,বাবু, শাওন, পাপ্পু ও শাহীন। এলাকাবাসীর দাবি-সন্ত্রাসী রিয়াদ ওরফে তুতু রিয়াদ তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। দক্ষিন বাড্ডার বাসিন্দা ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মী তুতু রিয়াদের ও কুত্তা রিফাতের নামে ডিএমপির কয়েকটি থানায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের মামলা রয়েছে। এই দুই সন্ত্রাসী ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় সব ধরনের মাদক ব্যবসা পরিচালিত হয়। এছাড়া দক্ষিন বাড্ডার ফুটপাতের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে তারা। স্থানীয় চা দোকানি জানায়, তারা সব সময় একসঙ্গে থাকে ও এলাকায় সবার সামনে ফেন্সিডিল খায় । বেশিরভাগ সদস্যের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্রও থাকে। কেউ কিছু বললেই তারা মারধর শুরু করে। কাউকে একা পেলে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং বিভিন্ন জায়গা জমি দখল করে রাখে । তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।
স্থানিয় ব্যবসায়ী ফজলু খন্দকার জানায় , তুতু রিয়াদের ভয়ে তটস্থ থাকে থানা পুলিশ । এরকম বহু হামলা মামলা হয় কিন্তু কিছুই হয়না তার বাহিনির । বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ এবং এসআই মামুনের সাথে রয়েছে তুতু রিয়াদ এবং কুত্তা রিফাতের বেশ সখ্যতা । প্রায়ই দক্ষিন বাড্ডায় বিভিন্ন প্রোগ্রাম করে ওসি দারোগাদের নিয়ে আসে তুতু রিয়াদ । কাজেই তাদের বহু ক্ষমতা । ওসি আজাদের মদদে এই বাহিনী মেরুলে ৪০ বিঘা জমি দখল করে রেখেছে এবং সেখানেই তারা তাদের টর্চার সেল করেছে এবং তুতু রিয়াদ ও কুত্তা রিফাতের অফিস বানিয়েছে । তাদের কাজকর্ম ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তুতু রিয়াদ গ্রুপ প্রতিদিন বিভিন্ন মানুষের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে। কেউ কিছু বললেই গুলি করে। গ্রুপটি থানার কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের প্রশ্রয়ে রিয়াদ রিফাত গ্রুপ এবং কিশোর গ্যাং দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জানায়, যাদের নাম আপনি জানিয়েছেন প্রত্যেকটা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। আমরা ওদের বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু বললে আমাদের জীবন বিপন্ন হবে। তুতু রিয়াদ গুলশান বাড্ডা থানার তালিকাভুক্ত অপরাধি এবং তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। গুলশান ডিপিডিসি কার্যালয়ে গিয়ে মোহাম্মদপুরের ঠিকাদার ওমরকে ৫ লক্ষ টাকা চাদার দাবিতে বেধরক মারপিট করে আহত করে এ বিষয়েও মামলা রয়েছে এছাড়াও শীর্ষ সন্ত্রাসী মাহবুবের সহযোগি হিসেবেও তুতু রিয়াদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করেছে । এই মাহবুবের বিরুদ্ধে বাড্ডার আলোচিত একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে । এলাকায় তারা খুব বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । কিছুদিনের মধ্যে বাড্ডা এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘাত হতে পারে।