নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ বরিশাল
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় সহিংসতা অব্যহত রয়েছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৬ নং ফরিদপুর ইউনিয়নের গাজীতলা বাজার সংলগ্ন বিপুল ও বিনয় দাসের বাড়ি ঘরে হামলা লুট ও মন্দিরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার পর থেকে সংখ্যালঘু পরিবারগুলো প্রতিবেশীর বাড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।
এছাড়াও বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ফলপট্টি সহ অর্ধশত দোকানে অগ্নি সংযোগ করে লুটপাট চালিয়েছে। বাস স্ট্যান্ড এলএফ জি চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ আপ্যায়ন হোটেলে, বাপ্পি মিষ্টান্ন ভান্ডার ভাঙচুর লুটপাট করা হয়েছে। উপজেলা শহরের সদর রোডে বেশ কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করে দখলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের চৌমাথা নিরঞ্জর ভ্যারাইটিজ স্টোরে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করেছে। ভরপাশা ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর করে লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর লুটপাট সহ সুশীল বাবু ও বিজয় মাঝির বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে অর্ধশত বাড়িঘর দোকানপাট ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুরা এখন আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অধিকাংশ হিন্দু ব্যবসায়ীরা হামলার ভয়ে নিজেরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছেন।
এছাড়াও ৭ আগস্ট উপজেলা শহরের চৌমাথা সানমুন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন আলোচনা সভায় ৭ নং ওয়ার্ডের বিএনপি ক্যাডার ৩৫ থেকে ৪০ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। ওই হামলায় উপজেলায় কর্মরত ৫ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
বাকেরগঞ্জের সাবেক বিএনপির এমপি আবুল হোসেন খান হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট ঘটনায় মাইকিং করে এলাকায় সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন পারামহল্লায় ভাঙচুর লুটপাট প্রতিবাদ করার। ইতিমধ্যে সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান সহ তার নেতাকর্মীরা ১৪ টি ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবং তিনি সকল নেতা কর্মীদের সচেতন হয়ে দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করা নির্দেশ দিয়েছেন। এসব ঘটনার সাথে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে অস্তিরতা বিরাজ করায় তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে পারছেননা। কোন সহযোগিতা করতে পারছেননা। ক্ষতিগ্রস্থতরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত সেনাবাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অনেক আত্মত্যাগের পর আমরা বিজয়ী হয়েছি। অথচ একটি মহল আমাদের আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে চেষ্টা করছে। তারা সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ও ভাংচুর করেছে। ওইসকল দুবৃত্তরা সেই সৈরাচার হাসিনার ন্যায় অত্যাচার ও দখল উৎসবে মেতে উঠেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, লুটপাট প্রতিরোধ, সংখ্যা লঘুদের প্রোটেকশন, পরিষ্কার অভিজান নানামুখী কর্মকাণ্ড নিয়ে মাঠে নেমেছে।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সর্বদলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা সভা করেছি। সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।