খান মেহেদী :- বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৌরাত্ম্য-আধিপত্য কমানো যাচ্ছে না কিছুতেই।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী এই উপজেলায় ১৮ টি ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার রয়েছে। বাকের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন গড়ে উঠেছে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যেখানে সরকারি হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তারেরা অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা টেস্ট করে থাকেন। এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে সিন্ডিকেট করে অর্থের বিনিময়ে রোগীদের টেস্ট,পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠায়। এতে দ্বিগুণ অর্থ গুনতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
উপজেলা শহরের সদর রোড এলাকায় মর্ডান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অপচিকিৎসার শিকার হয় কলসকাঠি ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদিস গ্রামের ইস্কেন্দার হাওলাদারের পুত্রবধূ। ঐ ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন সুফল পায়নি তারা। মর্ডান ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে এসে অপচিকিৎসা শিকার হয়েছে অনেকে এমন অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্জ্য শোধনাগার থাকা বাধ্যতামূলক হলেও কোন প্রতিষ্ঠানেই বর্জ্য শোধনাগার নেই। এছাড়া উপজেলায় গড়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশতেই দক্ষ ডিপ্লোমাধারী টেকনিশিয়ান না থাকলেও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। ইসলামিয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইনসাফ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গ্রীন লাইফ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবাসিক স্থায়ী ডাক্তার নেই। গ্রীন লাইফ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যে সকল নার্স রয়েছে তাদের অধিকাংশই নেই সার্টিফিকেট ও সনদপত্র। রাতে রোগী এলে চিকিৎসা দেয় ঐ সব নার্স। আবাসিকে যে সকল রোগীরা থাকেন তাদেরকে দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসা দিয়ে আসছে কথিত নার্স ও ক্লিনারেরা।
ইসলামিয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে চেম্বার করে ভিজিটের বিনিময় রোগী দেখেন ডিএমএফ লোকমান হোসেন মিঠু ও মিজানুর রহমান সোহেল।
অপারেশনের প্রয়োজন নেই, তারপরও এসব প্রতিষ্ঠানে অপারেশন করা হয়। টাকা নেওয়া হয় দ্বিগুণ।
এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা। যে কারণে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযান চালাচ্ছে না। ফলে এ সকল ক্লিনিকে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রীন লাইফ ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষরা জানায়, আমাদের ক্লিনিকে আবাসিক ডাক্তার হিসেবে ডাক্তার অদিতি বসু গাইনী বিশেষজ্ঞ আছেন। তিনি সকাল ১০ টায় আসেন সন্ধ্যা ৭ টায় চলে যায়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা: মারিয়া হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অব্যবস্থাপনায় চলছে। এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে আবাসিক ডাক্তার নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।