নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ থেকে সম্প্রচারিত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল বাংলা টিভির মালিক তথা ব্যাবস্হাপনা পরিচালক যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী সৈয়দ সামাদুল হক। নামের শেষে হক শব্দটি থাকলেও মূলত নিজের স্ত্রী, রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ও কর্মীদের হক মেরে খাওয়াই তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অতি সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়, বাংলাদেশ থেকে সম্প্রচারিত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল বাংলা টিভির মালিক তথা শেয়ার হোল্ডারদের নাম প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকাটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চ্যানেলটির চেয়ারম্যান বাংলাদেশের আখতার ফার্নিচারের মালিক কে এম আখতারুজ্জামান, পরিচালক তার ছেলে কে এম রিফাতুজ্জামান এবং ভাইস চেয়ারম্যান বিটিভির সাবেক সংবাদ পাঠক মনিরুল ইসলাম। যাদের কাছে প্রায় ২০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৭ ভাগ শেয়ার বিক্রি করা হয়। যদিও ২০১৭ সালে সম্প্রচারে আসার আগেই কয়েক কোটি টাকার বিনিময়ে চ্যানেলটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল সিলেটের বিতর্কিত ব্যাবসায়ী রাগীব আলীকে এবং তার মালিকানাধীন সিদ্ধশরীর ভবন থেকেই শুরু হয়েছিল চ্যানেলটির কাযক্রম । আশ্চর্যের বিষয়, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামাদুল হক প্রবাসী কোটায় টিভি চ্যানেলটির অনুমোদন ( লাইসেন্স) পেলেও মালিকানায় রাখা হয়নি প্রবাসী কোন ব্যাবসায়ীকে। এমনকি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সুপারিশে লাইসেন্স পেলেও মালিকানায় রাখা হয়নি প্রবাসী আওয়ামী লীগের কোন নেতাকে। এমনকি পত্রিকাটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বৃটেন প্রবাসী প্রয়াত সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সুপারিশে লাইসেন্স পেলেও মালিকানায় যুক্ত করা হয়নি গাফ্ফার চৌধুরীর সন্তানদের। সম্মানিত পরিচালক পদেও রাখা হয়নি তাদের। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান শরীফ জানান, সামাদুল হক এক সময় যুক্তরাজ্যে তার মালিকানাধীন জনমত পত্রিকায় চাকরি করলেও বাংলা টিভির সঙ্গে তার কোন ব্যাবসায়িক অংশীদারিত্ব নেই। যুক্তরাজ্যের কোন আওয়ামী লীগ নেতাকেই শেয়ার দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাজ্য প্রবাসী অপর এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, অত্যন্ত সুচতুর সামাদ, বিএনপি ক্ষমতায় এলে যাতে কোন সমস্যা না হয় এজন্য আওয়ামী লীগের কারো কাছে শেয়ার বিক্রি না করে বিএনপিপন্থী চিহ্নিত ব্যাবসায়ীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করেছেন। সামাদুল হক, এর আগে গত বিএনপি সরকারের আমলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হককে সাথে নিয়ে ২০০৫ সালে বাংলাদেশে চ্যানেল এস নামে একটি ডাউনলিংক চ্যানেল চালু করেছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেটি বন্ধ হয়ে গেলে, মাই টিভির মালিক নাসির উদ্দিন সাথীর প্রতারনার মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে লন্ডন চলে যান । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাজ্য প্রবাসী অপর এক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, সামাদুল হক তার নিজের স্ত্রীকেও বিশ্বাস করেন না। এজন্য তাকে কোম্পানির মালিকানায় না রেখে মালিকানায় রেখেছেন তার ভাগ্নেকে । শুধু তাই নয়, সামাদুলের স্ত্রী ডক্টরেট ডিগ্রিধারী হলেও তাকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা বেতনে নিজ প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিয়ে রেখেছেন। আর ভাগিনাকে কোম্পানির মালিকানা দেয়ার পাশাপাশি মাসিক বেতন ও দেন ১ লাখ টাকার বেশি। যেখানে সামাদুলের বৈষম্যের শিকার নিজের স্ত্রী, অন্যদের বেলায় তিনি কি করতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়। শুধু তাই নয়, বাংলা টিভির কর্মীদের বেতন ঠিকমত না দেয়া, টাকার বিনিময়ে প্রতিনিধি নিয়োগ বাণিজ্য, মফস্বল প্রতিনিধিদের কোন ধরনের বেতন-ভাতা না দিয়ে উল্টো তাদের খরচে ঘুরে বেড়ানোসহ রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। এছাড়া, বাংলা টিভির শেয়ার বিক্রির নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দুদক । অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হকসহ প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ পরিচালককে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৭ জুন তিনি বাংলা টিভির এমডিসহ পাঁচজনের বক্তব্য নেওয়ার কথাছিল। তবে গরমে অসুস্থতার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে সময়ের আবেদন করেছেন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হক।
চেয়ারম্যানঃ-আব্দুর রহিম খান,
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো : মাসুদ রানা
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ঢাকার বার্তা ২৪