ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

ফেঁসে যাচ্ছেন পরীমণি, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ কে হত্যাচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই!

  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
  • ৩০৭৬ বার পড়া হয়েছে

খান মাহাদী :- অবশেষে ফেঁসে যাচ্ছেন সময়ের আলোচিত বিতর্কিত চিত্র নায়িকা পরীমণি। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকা বোট ক্লাবের পরিচালক নাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমণি। কিন্তু চিত্রনায়িকার করা সেই মামলায় কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

তবে গত ১৮ মার্চ পরীমণি ও জিমির বিরুদ্ধে নাছিরের করা পাল্টা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে তদন্তের চার্জশিট দাখিল করেছে পিবিআই। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ মামলার প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

গত ১৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে পরীমণিসহ জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা মনির বলেন, পরীমণি ও জিমির বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এখন সাক্ষীরা আদালতে এই মামলার অভিযোগ প্রমাণ করবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে আসামি পরীমণি অসৎ উদ্দেশ্যে বাদী নাছিরকে ফাঁদে ফেলে ঢাকা বোট ক্লাবের নিয়ম উপেক্ষা করে ফ্রিতে তিন লিটারের ব্লু লেবেল মদ পার্সেল নিতে না পেরে বাদীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি প্রদান করেন।

পরীমণি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদী নাছিরের দিকে এসট্রে ছুড়ে মেরে তার ডান কানের ওপরে ও মাথায় আঘাত করে জখম করেন। এ ছাড়া ক্লাবের বারের ভিতরে যত্রতত্র গ্লাস, কাচের বোতল, এসট্রে ছুড়ে ফেলে তাণ্ডব করে। যে কারণে আসামি পরীমণির বিরুদ্ধে বাদীর আনা ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বারের ভেতরে তাণ্ডব করতে থাকলে সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকিকে বাদী নাছির আসামিদের নিয়ে বার থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন আসামি জিমি তেড়ে এসে বাদী নাছিরকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি প্রদর্শনসহ কিল-ঘুষি মারেন। এতে আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ মতে ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বাদীর আনা কোনো অভিযোগের সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে মামলার বাদী নাছির বলেন, পরীমণি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছিল। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে সেই রহস্য উন্মোচন হয়েছে। আমি সব সময় ন্যায় বিচার চেয়েছি এখনও সেটাই চাই আমি।

এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ঢাকা বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে একই বছরের ১৮ জুলাই এ মামলাটি গ্রহণ করে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন। নাসির ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য নাসিরকে চাপ দেন পরীমণি। তিনি দিতে রাজি না হওয়ায় বাদীকে গালমন্দ করেন তিনি। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির তার মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

মামলায় আরও বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা নাসিরকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন। পরবর্তীতে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন পরীমণি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

ফেঁসে যাচ্ছেন পরীমণি, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ কে হত্যাচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই!

আপডেট সময় : ১২:৫৪:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

খান মাহাদী :- অবশেষে ফেঁসে যাচ্ছেন সময়ের আলোচিত বিতর্কিত চিত্র নায়িকা পরীমণি। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকা বোট ক্লাবের পরিচালক নাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমণি। কিন্তু চিত্রনায়িকার করা সেই মামলায় কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

তবে গত ১৮ মার্চ পরীমণি ও জিমির বিরুদ্ধে নাছিরের করা পাল্টা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে তদন্তের চার্জশিট দাখিল করেছে পিবিআই। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ মামলার প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

গত ১৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে পরীমণিসহ জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা মনির বলেন, পরীমণি ও জিমির বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এখন সাক্ষীরা আদালতে এই মামলার অভিযোগ প্রমাণ করবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে আসামি পরীমণি অসৎ উদ্দেশ্যে বাদী নাছিরকে ফাঁদে ফেলে ঢাকা বোট ক্লাবের নিয়ম উপেক্ষা করে ফ্রিতে তিন লিটারের ব্লু লেবেল মদ পার্সেল নিতে না পেরে বাদীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি প্রদান করেন।

পরীমণি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদী নাছিরের দিকে এসট্রে ছুড়ে মেরে তার ডান কানের ওপরে ও মাথায় আঘাত করে জখম করেন। এ ছাড়া ক্লাবের বারের ভিতরে যত্রতত্র গ্লাস, কাচের বোতল, এসট্রে ছুড়ে ফেলে তাণ্ডব করে। যে কারণে আসামি পরীমণির বিরুদ্ধে বাদীর আনা ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বারের ভেতরে তাণ্ডব করতে থাকলে সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকিকে বাদী নাছির আসামিদের নিয়ে বার থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন আসামি জিমি তেড়ে এসে বাদী নাছিরকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি প্রদর্শনসহ কিল-ঘুষি মারেন। এতে আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ মতে ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বাদীর আনা কোনো অভিযোগের সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে মামলার বাদী নাছির বলেন, পরীমণি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছিল। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে সেই রহস্য উন্মোচন হয়েছে। আমি সব সময় ন্যায় বিচার চেয়েছি এখনও সেটাই চাই আমি।

এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ঢাকা বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে একই বছরের ১৮ জুলাই এ মামলাটি গ্রহণ করে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন। নাসির ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য নাসিরকে চাপ দেন পরীমণি। তিনি দিতে রাজি না হওয়ায় বাদীকে গালমন্দ করেন তিনি। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির তার মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

মামলায় আরও বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা নাসিরকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন। পরবর্তীতে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন পরীমণি।