মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে নওগাঁ হোমিওপ্যাথি কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা: মো: আব্দুল্লাহ আল সাফায়েত শামীমের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনের রাস্তার ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আওয়ামীলীগের সংগঠন স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল সাফায়েত শামীম পানের দোকানদার থেকে প্রিন্সিপাল হয়েছেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট তারিখে বোর্ড থেকে কলেজ স্থাপনের অনুমোদন পায়। ডিপ্লোমা কলেজ স্থাপনের নীতিমালা ৭ শর্ত মোতাবেক কাজী আব্দুর রশিদ এর রেজিঃ দানকৃত ১৭ শতক জমি কলেজের দখলে নেই। নিয়োগকালীন সময় কলেজ ভবন নির্মানের নামে প্রত্যেক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিকট থেকে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা কলেজ ভবন নির্মান না করে আত্নসাৎ করে। অধ্যক্ষসহ কয়েকজনে শতভাগ বেতন উত্তোলন। কয়েকজনে ৪০ ভাগ বেতন প্রদান করে। প্রিন্সিপালসহ কয়েকজনের বেতন বকেয়া নাই। কেউ কেউ কলেজ না করেও বেতন পায়। আমাদের মধ্যে কয়েক জনের ৪২ থেকে ৫৭ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
তারা আরও বলেন, শিক্ষক কর্মকর্তা কল্যান তহবিল নামে অগ্রণী ব্যাংক বোয়ালিয়া নওগাঁ শাখায় হিসাব খুলে তার সমুদয় টাকা আত্নসাৎ করেছেন। রেজুলেশন না দেখিয়ে সকলের স্বাক্ষর গ্রহন। ছাত্রদের কাছ থেকে নির্বাচনী পরীক্ষায়, ক্লাসে, অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন নামে জরিমানা আদায় করে আত্নসাৎ করে। তার ২০২১ সাল পর্যন্ত রুটিনে তার নাম ছিল না। শিক্ষকরা প্রতিবাদ করায় বাধ্য হয়ে পরবর্তীতে ক্লাস রুটিনে নাম দিয়ে ক্লাস করায় না। দূরবর্তী পছন্দের শিক্ষকদের ২থেকে ৩ মাস পরে উপস্থিত হয়ে সমুদয় স্বাক্ষর করায়। অপছন্দের শিক্ষক ১ দিন উপস্থিত না হলে অনুপস্থিতি করে দেয়। পকেট কমিটি সাজিয়ে কলেজ পরিচালনা করছেন এবং প্রতিষ্ঠানকে স্বজনপ্রীতি আত্নীয়করনে পরিনত করেছেন। অধ্যক্ষের সালিকা ডাঃ মোছাঃ হাফিজা আক্তার, শ্যালক ডাঃ মোঃ খোরশেদ আলম, ভায়রা ডাঃ মোঃ রুহুল আমিন ও পরিচালনা পরিষদের সদস্য কাজী আতিকুর রহমানের সহধর্মীনি ডাঃ মোছাঃ হেলেনা আক্তার ও তার বোন ডাঃ মোছাঃ ছাবিনা ইয়াসমিন ছুটি না নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করে। ফিরে এসে যথারীতি স্বাক্ষর করে।
এছাড়াও ছাত্রদের কাগজ আটকিয়ে অনৈতিক অর্থ আদায়। বেতন ছাড়াও নামে-বেনামে প্রত্যেক ছাত্রদের কাছ থেকে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা উঠিয়ে আত্নসাৎ করে। এমনকি তাদের ফেল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আত্নসাৎ করে। তার স্বেচ্ছাচারিতার কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানসহ ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদান করে। আমাদের শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে আমি আওয়ামীলীগের লোক বলে ভয় দেখানো, চাকুরী থাকবেনা বলা, মামলার হুমকী প্রদান, গালিগালাজ ও অপমান অপদস্থ, বিশেষ করে স্থানীয় শিক্ষকদেরকে দমন পিড়ন ও কোনঠাকা করে রেখেছে।
এর আগে অনিয়মের খবর বিভিন্ন পেপার পত্রিকা ও জেলা প্রশাসক অবহিত করাও মহামান্য হাইকোর্টে রীট দায়ের করলে দুদক বরাবর তদন্তের আদেশ হলেও আওয়ামী প্রভাবের কারনে কোন তদন্তও অদ্যবধি হয় নাই। তার ভাষা আমার কথামত কলেজ চলবে, মেনে নিন না হলে মানিয়ে নিন। না হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে চাকুরী ছেড়ে চলে যান।
এমতাবস্থায় কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি স্বচ্ছ কলেজ প্রতিষ্ঠায় সৈরাচারী মনোভাব, শাসন, শোষনকারী এই ভয়াল দানবের হাত থেকে কলেজকে রক্ষায় এক দফা এক দাবী জালেম অধ্যক্ষের পদত্যাগসহ সকল দূর্ণীতির বিচার চায়।