নড়াইল প্রতিনিধি:- ধর্ষণচেষ্টা, সম্পদ আত্মসাৎ ও ঘুষ লেনদেনসহ নানা অপকর্মে জড়িত নড়াইলের ব্যাংক কর্মকর্তা জোনায়েদ হোসেন। এসব ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগীরা। নানা অপকর্ম করেও এতোদিন বহাল তবিয়তে নড়াইলে ছিলেন জোনায়েদ। অবশেষে গত ২৭ জুলাই নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল কৃষি ব্যাংক শাখা থেকে তাঁকে সাতক্ষীরায় বদলী করা হয়েছে। এদিকে সম্প্রতি তার এ বদলীকে শাস্তিমূলক আখ্যা দিয়ে ভুক্তভোগীরা তার কৃতকর্মের সকল প্রমান সাংবাদিকদের নিকট হস্তান্তর করেছেন।
জোনায়েদ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে৷ সে ২০১৫ সাল থেকে কৃষি ব্যাংকে কর্মরত। নড়াইল সদরের আগে তিনি লোহাগড়া ও কালিয়া কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।
জোনায়েদের দ্বারা ক্ষতিগ্রাস্ত ভুক্তভোগিরা জানায়,
কৃষি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জোনায়েদ একসময় নড়াইলে শহরের আগে কালিয়া ও লোহাগড়া শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি মূলত লোন সেকশনে আই
ও হিসেবে কাজ করে থাকেন। লোন প্রদানের ক্ষেত্রে ভূয়া কাগজপত্রে গ্রাহকদের অর্থের বিনিময়ে লোন প্রদান করে থাকেন। এভাবে তিনি বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি নিজ এলাকায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ডুপলেক্স বাড়ি এবং খুলনা হরিণটানা থানাধীন চক আসানখালী মৌজার মোস্তফা মোড়ে ৩ কোটি টাকা মূল্যের জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। যার দলিল নং- ১৯৬৩। এছাড়া চাঁচুড়ি ও পুরুলিয়া মৌজায় আনুমানিক ২০/৩০ একর জমি ক্রয় করেছেন এবং চাঁচুড়ি পুরুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাড়িসহ জায়গা ক্রয় করেন। এভাবে তিনি অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছেন এবং সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু তৃণমূল পরিষদের চাঁচুড়ি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়াও গতবছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বাড়ির পাশের এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়, যা বিচারাধীন। পরে ওই মামলার সাক্ষীদের মারপটি করে জোনায়েদ। মারপিটের ঘটনায় সে বছর ২৮ অক্টোবর কালিয়া থানায় জোনায়েদের নামে আরেকটি মামলা দায়ের হয়। এছাড়াও অসহায় বিধবা নারীর ভূমি দখলের চেষ্টার কারনে গত বছরের ৩০ অক্টোবর নড়াইল বিজ্ঞ আমলী আদালতে জোনায়েদকে আসামী করে আরও একটি মামলা করেন।
ভুক্তভোগী লোহাগড়া উপজেলার তেলকাড়া গ্রামের নুরুজ্জামান শিকদার বলেন, তাঁকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা লোন দেওয়ার জন্য অফিস খরচের কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন এবং একই গ্রামের আরিফুলের কাছ থেকে লোন রিকভারি করতে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন জোনায়েদ।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জোনায়েদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। এ কারণে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।