সাম্প্রতি সময়ে র্যাব-৩ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ইপিজেড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন থানায় সশস্ত্র ডাকাতির অভিযোগে মোট ১২টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার সাইদুর রহমান মানিক (৩৫)'কে ৩০ মার্চ ২০২৪ ইং রাত ৮ ঘটিকায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
দুপুরে র্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেঃকর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকেদের জানান গ্রেফতারকৃত আসামি সাইদুর রহমান মানিক পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার মূর্তমান আতঙ্ক সশস্ত্র আন্তঃজেলা ডাকাত দল ‘‘মানিক বাহিনীর” সর্দার। তার নেতৃত্বে পটুয়াখালীসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রায় ২০ টিরও অধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে বরগুনা জেলার আমতলী বাজার থানায় ০৫ টি ডাকাতি মামলা ও ২টি অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। এছাড়াও পটুয়াখালী সদর থানায় ৫টি ডাকাতি মামলাসহ তার বিরুদ্ধে সর্বমোট ১২ টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মানিক উক্ত মামলাসমূহের ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি।
তিনি আরো জানান যে বহুল আলোচিত ২০১৫ সালে পটুয়াখালী সদর থানাধীন মাদারবুনিয়া ও বোতলবুনিয়া গ্রামে একই রাতে তিনটি বসতবাড়িতে ডাকাতির ঘটনাটি তার নেতৃত্বেই ঘটেছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত মানিকের নেতৃত্বে ডাকাত দলের অপরাপর সদস্য নড়াইল শহীদ, নাদ্রা আল আমিন, রাসেল তালুকদার, জব্বার, রাকিব হাওলাদার, আলামিন মাতুব্বর, কামাল মাতুব্বর, চাঁন হাওলাদার, বশির সরদারসহ ১০/১২ জন সদস্যের একটি ডাকাত দল মানিকের বাড়িতে বসেই ডাকাতির প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
পরবর্তীতে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং ৫ ঘটিকায় বোতলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজের বাড়িতে তারা দেশীয় তৈরী ওয়ানশুটারগান, রামদা, হাসুয়া, দা, শাবল, ছোরা প্রভৃতি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা প্রথমে লোহার শাবল দিয়ে দরজা ফাঁকা করে কৌশলে দরজা ভেঙে বসতবাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে বসবাসরত সকল সদস্যকে ঘুম থেকে তুলে মারধর করে একটি কক্ষে এনে চোখ, হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে এবং কোনরকম শব্দ করলে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে দুইজন ডাকাত বাড়ির বাহিরে পাহাড়ায় থাকে এবং বাকি সকল ডাকাত গ্রেফতারকৃত মানিকের নেতৃত্বে বাড়িতে রক্ষিত নগদ ১,৫৫,০০০/- টাকা এবং ৩,২৬,০০০/- টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনায় আইয়ুব আলী বাদী হয়ে মমতাজ এবং আজিজ মাঝিকে সাথে নিয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় গ্রেফতারকৃত মানিকের ডাকাত দলের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে।পটুয়াখালী জেলার সদর থানাধীন পশ্চিম আউলিয়াপুর এলাকার জনৈক সেলিম হাওলাদার এর বাড়িতে ১১ আগষ্ট ২০১৫ ইং ১ ঘটিকার সময় গ্রেফতারকৃত মানিকের নেতৃত্বে ৭/৮ সদস্যের একটি ডাকাত দল অবৈধ অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হানা দেয়। তারা বাড়ির প্রধান দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির মালিক সেলিম হাওলাদার এবং তার পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শোকেজ ও আলমারী ভেঙে নগদ ১০,৫০০/- টাকা এবং ১,৫৫,০০০/- টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত মানিক আলিম পাশ। সে চাকরি না পাওয়ায় ২০০৪ সাল হতে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিজ এলাকায় রাইড শেয়ার করতো। তখন তার ডাকাতি কার্যক্রমের অন্যতম সহযোগী নড়াইল শহীদ এর সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে ২০১৫ সালে অবৈধভাবে জনগণের সম্পদ লুট করে অর্থ উপার্জনের লোভে সে ডাকাতির কাজে জড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে একাধিক ডাকাতির মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী হওয়া শুরু হলে সে পালিয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চর সুমিলপাড়া এলাকায় আত্মগোপন করে।গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
চেয়ারম্যানঃ-আব্দুর রহিম খান,
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো : মাসুদ রানা
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ঢাকার বার্তা ২৪