ঢাকা ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গী আস্তানা অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩
  • ৩৪২০ বার পড়া হয়েছে

গত ১২ আগষ্ট ২০২৩ ইং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউরা থানাধীন কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, সোয়াট অপারেশন “অপারেশন হিলসাইড” পরিচালনা করে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে ৪ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারীসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

এসময় উক্ত জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে বিপুল পরিমান বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, ছুরি-রামদা সহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র, কমান্ডো বুট, পাঞ্চিং ব্যাগ ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ সামগ্রী, উগ্রবাদী বই, নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গ্রেফতারকৃত সকলেই কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে সশস্ত্র জিহাদে অংশগ্রহন এবং তার প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য কথিত হিজরতের মাধ্যমে নিজ নিজ গৃহ ত্যাগ করে সপরিবারে উক্ত পার্বত্য এলাকায় আসে এবং প্রশিক্ষণ শুরু করে।

দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, মোঃ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান,
সাম্প্রতিক সময়ে যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে বিভিন্ন বয়সী লোকদের পরিবার সহ এবং পরিবার ছাড়া নিখোঁজ হবার বিষয়ে তথ্য পেয়ে এ সংক্রান্তে অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানা হতে ডাঃ সোহেল তানজীম রানা, যশোর জেলা হতে ঢাকার নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থী ফাহিম, জামালপুর হতে এরশাদুজ্জামান শাহিন সহ আরো অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।

এরই সূত্র চলমান অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে গত ৭ আগষ্ট ২০২৩ইং রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে কতিত হিজরতের মাধ্যমে সপরিবারে নিজ নিজ গৃহ ত্যাগ করে আসা ৬জন নারী, ৪জন পুরুষসহ মোট ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের একটি টিম।

এসময় তাদের সাথে থাকা ৮ শিশুকে হেফাজতে নেয়া হয় পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা মোট ৬ টি পরিবার হিজরতের জন্য গৃহত্যাগ করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মেহেরপুর জেলা হতে হিজরতকারী ৫ টি পরিবার এবং ঝিনাইদহ জেলা হতে হিজরতকারী একটি পরিবার ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা সকলেই দেশের অভ্যন্তরে অজ্ঞাত কোন স্থানে কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে স্থাপিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যোগদানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামীগণ আরো জানায় উক্ত ইমাম মাহমুদ, ইমাম মাহাদী’র অগ্রবর্তী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। তারা বিশ্বাস করে বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে ইমাম মাহাদীর পূর্ণ যে “দূর্বল প্রকৃতির” ব্যক্তির আবির্ভাবের কথা বলা হয়েছে, তাদের নেতা ইমাম মাহমুদ সেই ব্যক্তিউক্ত কথিত ইমাম মাহমুদ ভারতীয় উপমহাদেশে জিহাদে নেতৃত্ব প্রদান করবেন। গ্রেফতারকৃতগন জানায় কথিত ইমাম মাহমুদ তাদের বলেন যারা উক্ত জিহাদে অংশ গ্রহন করবেন তারা সকলেই পরকালীন পুরস্কার প্রাপ্ত হবেন এবং জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহনের প্রথম ধাপ হল গৃহ ত্যাগ তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহনের উদ্দশ্যে ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠিত হবার জন্য তারা সকলে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল।

পরবর্তীতে গত ১২ আগষ্ট ২০২৩ ইং মধ্যরাতে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন মিরপুর সরকারী বাংলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই গ্রুপের আরো এক সদস্য মোঃ ফরহাদকে গ্রেফতার করে সিটিআই ডিভিশনের একটি টিম। গ্রেফতারকৃত ফরহাদ জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউরা থানা এলাকায় একটি দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় লোকচক্ষুর অন্তরালে কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে তার বেশকিছু অনুসারী আস্তানা স্থাপন করেছে বলে জানান তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গী আস্তানা অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান

আপডেট সময় : ০৪:৫২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩

গত ১২ আগষ্ট ২০২৩ ইং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউরা থানাধীন কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, সোয়াট অপারেশন “অপারেশন হিলসাইড” পরিচালনা করে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে ৪ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারীসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

এসময় উক্ত জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে বিপুল পরিমান বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, ছুরি-রামদা সহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র, কমান্ডো বুট, পাঞ্চিং ব্যাগ ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ সামগ্রী, উগ্রবাদী বই, নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গ্রেফতারকৃত সকলেই কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে সশস্ত্র জিহাদে অংশগ্রহন এবং তার প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য কথিত হিজরতের মাধ্যমে নিজ নিজ গৃহ ত্যাগ করে সপরিবারে উক্ত পার্বত্য এলাকায় আসে এবং প্রশিক্ষণ শুরু করে।

দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, মোঃ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান,
সাম্প্রতিক সময়ে যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে বিভিন্ন বয়সী লোকদের পরিবার সহ এবং পরিবার ছাড়া নিখোঁজ হবার বিষয়ে তথ্য পেয়ে এ সংক্রান্তে অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানা হতে ডাঃ সোহেল তানজীম রানা, যশোর জেলা হতে ঢাকার নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থী ফাহিম, জামালপুর হতে এরশাদুজ্জামান শাহিন সহ আরো অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।

এরই সূত্র চলমান অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে গত ৭ আগষ্ট ২০২৩ইং রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে কতিত হিজরতের মাধ্যমে সপরিবারে নিজ নিজ গৃহ ত্যাগ করে আসা ৬জন নারী, ৪জন পুরুষসহ মোট ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের একটি টিম।

এসময় তাদের সাথে থাকা ৮ শিশুকে হেফাজতে নেয়া হয় পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় কথিত ইমাম মাহমুদের আহবানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা মোট ৬ টি পরিবার হিজরতের জন্য গৃহত্যাগ করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মেহেরপুর জেলা হতে হিজরতকারী ৫ টি পরিবার এবং ঝিনাইদহ জেলা হতে হিজরতকারী একটি পরিবার ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা সকলেই দেশের অভ্যন্তরে অজ্ঞাত কোন স্থানে কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে স্থাপিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যোগদানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামীগণ আরো জানায় উক্ত ইমাম মাহমুদ, ইমাম মাহাদী’র অগ্রবর্তী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। তারা বিশ্বাস করে বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে ইমাম মাহাদীর পূর্ণ যে “দূর্বল প্রকৃতির” ব্যক্তির আবির্ভাবের কথা বলা হয়েছে, তাদের নেতা ইমাম মাহমুদ সেই ব্যক্তিউক্ত কথিত ইমাম মাহমুদ ভারতীয় উপমহাদেশে জিহাদে নেতৃত্ব প্রদান করবেন। গ্রেফতারকৃতগন জানায় কথিত ইমাম মাহমুদ তাদের বলেন যারা উক্ত জিহাদে অংশ গ্রহন করবেন তারা সকলেই পরকালীন পুরস্কার প্রাপ্ত হবেন এবং জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহনের প্রথম ধাপ হল গৃহ ত্যাগ তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহনের উদ্দশ্যে ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠিত হবার জন্য তারা সকলে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল।

পরবর্তীতে গত ১২ আগষ্ট ২০২৩ ইং মধ্যরাতে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন মিরপুর সরকারী বাংলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই গ্রুপের আরো এক সদস্য মোঃ ফরহাদকে গ্রেফতার করে সিটিআই ডিভিশনের একটি টিম। গ্রেফতারকৃত ফরহাদ জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউরা থানা এলাকায় একটি দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় লোকচক্ষুর অন্তরালে কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে তার বেশকিছু অনুসারী আস্তানা স্থাপন করেছে বলে জানান তিনি।