ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পনে সরকার শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট নজর দিযয়েছেন। সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ শিক্ষার খাতেই সরকার ব্যয় করছেন। দেশের প্রতিটা জেলা এবং উপজেলা সদরে একটা করে মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অবকাঠামো নির্মাণ করলেও ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা সদরে নামে আছে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিন্তু ভৌত অবকাঠামো সেই আগের মত জরাজীর্ণ মেয়াদোত্তীর্ণ ভবনগুলো।
১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ফুলগাজী মজুমদারের সৃষ্ট ফুলগাজী বাজার সদরে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে প্রথম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নিবন্ধিত হয় তৎকালীন ফেনী মহকুমার বর্তমান ফুলগাজী উপজেলার এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। যেহেতু ফুলগাজী সদর বাজারে সে হিসেবে পড়ালেখা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি ছিল এবং ভালো ফলাফলে এগিয়ে আছে। ফেনীর উত্তরাঞ্চল পরশুরাম উপজেলার অন্তর্গত ছিল বর্তমান উপজেলা ফুলগাজী। ২০০২ সালে ফুলগাজী পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হওয়ায় উপজেলা সদরে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৩৫০ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে এবং ফলাফলের দিকেও গোটা উপজেলার অন্যান্য সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এগিয়ে। কিন্তু বিদ্যালযয়ের পুরনো ভবন ছাড়া নতুন কোন ভবন নির্মাণ হয়নি। এছাড়া পুরাতন ১ তোলা তিনটি ভবনেই জরাজীর্ণ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। কোনরকম জোড়া তালি রং দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
বর্তমান সরকারের নতুন শিক্ষা কার্যক্রমে এই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে মোট কক্ষের প্রয়োজন ১১ টি। যথাক্রমে ৪+১টি,৫+১টি, প্রথম শ্রেণি ১টি, দ্বিতীয় শ্রেণী ২টি, তৃতীয় শ্রেণি ২টি, চতুর্থ শ্রেণী ২ টি, ও পঞ্চম শ্রেণীর ২ টি মোট ১১ টি শ্রেণিকক্ষের মাঝে আছে মাত্র ৬ টি তাও আবার জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ। পাশে ফুলগাজী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একটি ভবনে দুটি কক্ষ ধার করে এতে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম চালাচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে এই ফুলগাজী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ সৈয়দ সাঈদুজ্জামান সমকালকে বলেন “আমি ২০১৫ সাল থেকে এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি এযাবৎ আমি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক মহোদয়ের বরাবরে একাধিক বার আবেদন করেছি নতুন ভবনের জন্য। এছাড়া স্থানীয় সাবেক সাংসদ শিরীন আখতার, মাননীয় জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে নতুন ভবন ও আসবাবপত্রের জন্য একাধিকবার দরখাস্ত দিয়েছি। বর্তমানে ভয়ে এবং আতঙ্কে মেয়াদ উত্তীর্ণ জরাজীর্ণ ভবনগুলোতে আমি কোনো রকম রংতালি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে যেকোনো সময় ভেঙ্গে পড়লে অকালে ঝরে যাবে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণ। আমার এই বিদ্যালয়ে দক্ষ শিক্ষক মন্ডলী আছে এছাড়া প্রতিবছর ভালো ফলাফলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে চলছে এই ফুলগাজী উপজেলা সদরে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি”
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুলতানা রাজিয়া জানায় “ইতিমধ্যে আমি মহাপরিচালক বরাবরে উপজেলায় ২০ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তার মধ্যে এই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের অগ্রধিকার ভিত্তিতে উল্লেখ করেছি।
এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া ভূঁইয়া জানায় “উপজেলা সদরে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সব দিক থেকে মডেল হিসাবেই গণ্য করা হয়, আমি এই বিদ্যালয়ে গিয়েছি বইমেলায় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরজমিনে দেখেছি শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রমে সবদিক থেকে বিবেচনা করলে এখানে একটি বহুতল ভবন প্রয়োজন”
বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুক্তাদির মাহামুদের বাবা আব্দুল ওহাব জানায় এই বিদ্যালয়ে ভবন গুলো জরাজীর্ণ দেওয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা যায়। কখন যে, ভেঙ্গে পড়ে তার ঠিক নাই। আমার ছেলেকে পাঠিয়ে আমি খুব চিন্তায় থাকি! এছাড়া ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মনির আহাম্মেদের পিতা ফিরোজ আহাম্মেদ একই আতঙ্কে থাকে তার ছেলেকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে। এছাড়া তিনি প্রধান শিক্ষককে উক্ত বিষয়ে অবগত করেছেন।
পরিশেষে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ সাঈদুজ্জামান জানান উপজেলার শিক্ষা অফিস থেকে তদন্ত টিম এসে ১৯৯৫ইং সালে নির্মিত একতলার একটি ভবন গত ০৫-০৭-২০২৩খ্রি. জরাজীর্ণ ঘোষণা করে গেছে।
সংবাদ শিরোনাম ::
জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠ্যক্রম চালাচ্ছে ফুলগাজী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- মাসুদ রানা
- আপডেট সময় : ১১:৪০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- ৩১৪১ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ