নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:- বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইতে রাস্তাসংলগ্ন সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের জমিতে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। স্থানীয় কয়েকজন যুবক মিলে কীর্তনখোলা নদীর পূর্বপ্রান্তে সড়কের পাশে সওজের ভূমিতে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আসছে।
সম্প্রতি সেই দোকানগুলো পেছনের ভূমি মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন তার জমিতে ভবন তুলতে গেলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এবং জনৈক ওই ব্যক্তির ভূমির সামনে থেকে দোকানপাট সরিয়ে নিতে অস্বকৃতি জানিয়ে তার কাছে মোটা অংকের উৎকোচ দাবি করা হচ্ছে।
এই ঘটনাটি কোতয়ালি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে, ভূমি মালিকের অভিযোগটি এসআই পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা তদন্ত করলেও সেখানকার দোকানিরা হিংসা উস্কে দিচ্ছে। জমি মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশসহ এমনকি তার কর্মস্থল সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে হয়রানি করে চলছে।
ভূমি মালিক জাহাঙ্গীরের ছেলে জাহিদ হাসান জানান, কীর্তনখোলার পূর্বপাড় বেলতলা খেয়াঘাটসংলগ্ন রাস্তার পাশে তাদের একটি দাগে একুশ শতাংশ জমি আছে। সেই জমির সম্মুখভাগে রয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কিছু ভূমি, যাতে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আসছেন স্থানীয় আরিফুর রহমান, সাইফুর রহমান টিপু, মো. মোকলেস, মো. খবির খান এবং আসাদুজ্জামান রাসেল মোল্লাসহ ২/৪ জন। কিছুদিন পূর্বে জাহাঙ্গীর হোসেন তার ভূমিতে ভবন নির্মাণ শুরু করলে অনেকেই দোকানপাট সরিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু উল্লেখিতদের একাধিকবার বলার পরেও তারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অন্যত্র নেওয়াতো দূরের কথা, উল্টো প্রথমে মোটা অংকের অর্থ দাবি এবং পরবর্তীতে ১০ শতাংশ জমি চাইছেন। এই ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে, যা তদন্ত করছেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজেদ।
অবশ্য এই পুলিশ কর্মকর্তাও সওজের ভূমিতে অবৈধ দোকান নির্মাণ করে ভাড়া উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, সড়কসংলগ্ন ভূমি মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে বৃহস্পতিবার থানায় ডাকা হয়েছে, সেখানে বিষয়টি সমাধান হতে পারে।
সাবরেজিস্ট্র অফিসের সহায়ক জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, একুশ শংতাশ ভূমির প্রকৃত মালিক তাঁর স্ত্রী নাছিমা বেগম। কিছুদিন পূর্বে সেখানে ভবন নির্মাণ করতে গেলে অনেকে দোকান সরিয়ে নিয়ে গেলেও কজন আছেন, যারা প্রথমে ২০ লাখ টাকা এবং পরবর্তীতে ১০ শতাংশ জমি চাইছেন। কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় তারা এখন বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করাসহ সংবাদ সম্মেলন করে হয়রানি করছেন, যে ঘটনায় স্থানীয় সুধীমহলও সংক্ষুব্ধ হয়ে আছেন।
সওজের ভূমিতে দোকান নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, তাদের একমাত্র সড়ক ও জনপদ বিভাগ সরানোর এখতিয়ার রাখে। তাহলে নারীর ভূমির সামনে থেকে দোকান সরিয়ে নিতে কোনো প্রথমে টাকা এবং পরবর্তীতে ১০ শতাংশ ভূমি চাওয়া হলো, এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান রাসেল মোল্লা বলেন, অভিযোগটি অসত্য।
এদিকে সওজের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেলতলা খেয়াঘাটে তাদের রাস্তার পাশের ভূমিতে দোকান দেওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কারণ সওজের ভূমি দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করার কোনো সুযোগ নেই, তারপরেও যদি এমনটি কেউ করে থাকে তাহলে ব্যবস্থাগ্রহণের সুযোগ আছে।
অভিযোগের বিষয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. আরিচুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষকে ডাকা হয়েছে, সেখানে তাদের বয়ান শুনে একটি সমাধান দেওয়া হবে। তবে জমিটি যেহেতু সওজের, সেক্ষেত্রে তাদেরই ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে, যদি তারা উচ্ছেদ করতে চায় তাহলে পুলিশ সহায়তা করবে, জানান ওসি।’