নিজস্ব প্রতিবেদকঃচকবাজার থানার ওসি আব্দুল কাইউম ও ইমামগঞ্জ রহমানিয়া ট্রান্সপোর্টের মালিক পলিথিন ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম মুরাদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ করা হয়েছে। সদর দফতরের আইজিপিস কমপ্লেইন সেলে অভিযোগ করেছেন একজন গাড়ির মালিক। অভিযোগ নম্বর, এসএল-৭৭।
গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ওই অভিযোগ পর্যালোচনা করে জানা যায়, একজন গাড়ি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় সরকার নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করেন মুরাদ। যা জানতেন না ওই গাড়ির মালিক।এ ছাড়া অন্যান্য ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীরাও তার গাড়ি ভাড়া নিয়ে কে কী পণ্য পরিবহণ করছেন তা জানার সুযোগ নেই। তবে তার গাড়ি ভাড়া নিয়ে সরকার নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করেন মুরাদ এমন তথ্য জানার পর মুরাদকে গাড়ি ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। এ নিয়ে দু জনের মধ্যে মনমালিন্যও হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মুরাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় পরিবেশ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তার ট্রান্সপোর্টে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে তার ভাই মামুনকে ৬ মাসের সাজাও প্রদান করে র্যাব। দেশের কোথাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার গাড়ি আটক করলে সোর্স এবং গাড়ির লেবারকে তার অফিসে এনে নির্যাতন করেন এবং চকবাজার থানা পুলিশের মাধ্যমে চালান করেন।
মোক্তার হোসেনের সঙ্গে মনমালিন্যের জেরে গত ১৮ জানুয়ারি রাতে কৌশলে সরকার নিষিদ্ধ পলিথিনের বস্তায় জিপিএস ট্র্যাকার ঢুকিয়ে দেন মুরাদ। যাতে অভিযোগ করতে পারেন, তার গাড়ি আটকানোর জন্য জিপিএস ট্র্যাকার রেখেছেন মোক্তার।
গত ২৬ জানুয়ারি পরিকল্পনা অনুযায়ী জিপিএস ট্যাকার রাখাকে কেন্দ্র করে জনৈক জসিমের কারখানার লেবার সেলিমকে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মারধর করে জোরপূর্বক মোক্তার হোসেনের নাম বলিয়ে ভিডিও ধারণ করেন মুরাদ। ওই ভিডিওর ভিত্তিতে ওই দিন রাতেই আনুমানিক দেড়টার দিকে চকবাজার থানার ওসি আব্দুল কাইউমের নির্দেশে পুলিশের কর্মকর্তা অলিউল্লার নেতৃত্বে সাদা পোশাকে লালবাগ থানাধীন নিজ বাসা থেকে মোক্তারকে চকবাজার থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন মোক্তার।
এরপর ২৮ জানুয়ারি মোক্তারের বিরুদ্ধে মুরাদ বাদি হয়ে একটি প্রতারণা মামলাও করেন। যার নম্বর ৭৩(১)২৩। চকবাজার থানায় তাকে দুই রাত একদিন আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়া ৫০ লাখ টাকা ঘুষও দাবি করেন ওসি। অন্যথায় অস্ত্র-মাদক মামলা দিয়ে চালানের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ মোক্তারের। এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন ওসি এমন অভিযোগও করেছেন মোক্তার। ওসি কাইউম সরকার নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসায় মুরাদকে সহযোগিতাও করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০২ সালে দেশে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার এবং এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও মুরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো সহযোগিতা করছেন ওসি কাইউম।
মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগও করা হয়। এ ছাড়া মুরাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও থেমে নেই তার নিষিদ্ধ ব্যবসা ও নির্যাতন।
জানতে চাইলে চকবাজার থানার ওসি আব্দুল কাইউম বলেন, অভিযোগটি সঠিক না। মামলা হলে মানুষ উল্টোপাল্টা বলবেই।
তিনি বলেন, তার কাছ থেকে ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। সে মালের মধ্যে ডিভাইস রাখতো। বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি ধরিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, গ্রেফতারও হয়েছে। সে ১৬৪-এ জবানবন্দিও দিয়েছে। পুরো বিষয়টি ডিসি স্যার, এডিসি স্যারও জানেন। এই ঘটনায় লুকোচুরির কিছুই নেই।
চেয়ারম্যানঃ-আব্দুর রহিম খান,
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো : মাসুদ রানা
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ঢাকার বার্তা ২৪