ঢাকা ১০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

ওয়াসিম যায় কবরে, আমি যাই আইসিওতে

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩০৪৩ বার পড়া হয়েছে

 

বলছি জুলাইয়ের গল্প,১৫ ই জুলাই রাত ওয়াসিম ফোন দেয়,তখন ফোন দেয়, বলে ভাই আগামীকাল প্রোগ্রাম কয়টায়, সাধারণত সেই ফোন দিয়ে সালাম দেয় এবং নরম সুরে কথা বলে কিন্তু সেইদিন তার কথাগুলো রুক্ষভাষী, আমিও বললাম আগামীকাল প্রোগ্রাম বর্তমান ওয়াসিম আকরাম স্টেশন (ষোলশহর স্টেশন) দুপুর ২ টায়।
ঠিক আছে ভাই, এরপরে ফোন রাখলো সালাম দিয়ে।

পরের দিন সকাল ১০ টা থেকেই ষোলশহর ওয়াসিম আকরাম স্টেশন এ ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় যেনো শিক্ষার্থীরা ১৬ ই জুলাইয়ের সমাবেশ না করতে পারে।

চট্টলার রাজপথে থমথমে অবস্থা, সাধারণ শিক্ষার্থীরাও রাজপথে নামার সব প্ল্যান করে, এরই মধ্যে ১ টা বেজে গেলো তখন সবাই সবাইর বাসা থেকে বের হলো এদিকে কিছুক্ষন পরে ওয়াসিম ফোন দিলো বললো ভাই ২ নং গেইট, ষোলশহর, মুরাদপুরে ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা অবস্থান করে রাখছে ছাত্ররা যেনো প্রোগ্রাম করতে না পারে এরই মধ্যে অনেক জায়গায় ছাত্রদের উপরে হামলা করতেছে।

রাসেল রাফি ঘোষণা দিলো আলোচনা করে বললো সবাই মুরাদপুরে আসুন। আমরাও সাহস বুকে রেখে সবাই মুরাদপুরে আসি এবং অবস্থান নি,যেদিকে ছাত্রদের পাচ্ছে সেখানেই হামলা করছে ক্যাডাররা।

এরই মধ্যে নোমান ভাই বলে উঠলো ফারুক ওয়াসিম নাই,মানে বুঝিনি এরই মধ্যে আমি ফোন দিচ্ছি ওয়াসিম কে ফোন ধরছেনা,এরই মধ্যে ডা: মেহেদী ভাইকে ফোন দিয়ে বলি ভাই ইমার্জেন্সি চট্টগ্রাম মেডিকেলে যান, ওয়াসিম কে নাকি মেরে ফেলছে সন্ত্রাসীরা, এরই মধ্যে ভাই গিয়ে নিশ্চিত করে ওয়াসিম নাই,তখন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, আমি কি করবো বুঝতে পারছিলামনা,তখন মাইকে এনাউন্স করি আমাদের সহযোদ্ধা ওয়াসিম আকরামকে হাসিনার বাহিনীরা মেরে ফেলছে এই বলে সবাইকে নিয়ে ষোলশহর অভিমুখে রওনা দি,ক্যাডার বাহিনি আমাদের ছাত্রদের দিকে তেড়ে আসে আমি সামনে চলে আসি রক্ত তখন কেমন করছিলো বুঝতে পারছিলামনা আমার ভাই নেই, এরই মধ্যে আমিও হাসিনার ক্যাডার বাহিনীর গুলি খেয়ে শুয়ে পড়ি তখন আবার গায়ে লাঠি সোঠা দিয়ে হামলা করে, কয়েকজন ভাই আমাকে ধরে হামজারবাগে একটা প্রাইভেট হসপিটালে নেয়, সেখানে রাখেনা এরপরে নিয়ে যায় এভারকেয়ারে তখন আর হুশ নেই, যখন হুশ আসে তখন দেখি আমার পাশে শরিফুল ইসলাম তুহিন, সাব্বির, জুয়েল, ইয়াছিন ভাই সহ আমার বাবা, কাকারা সবাই, সেখানেও আমাকে থাকতে দেয়নি পরে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম নিউ লাইফ হসপিটালে পরবর্তীতে আমাকে যে দেখতে আসে শরিফুল ইসলাম তুহিন ভাই ১৭ জুলাই গ্রেফতার হয়,আমি আমার ভাই ওয়াসিমের লাশটাকেও দেখতে পারলাম না, এই দু:খ কাকে বলি কিভাবে বলি, এই দু:খ আমার আজীবন থেকে যাবে।

মো: ওমর ফারুক সাগর সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম জেলা।
সদস্য সচিব, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

ওয়াসিম যায় কবরে, আমি যাই আইসিওতে

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

 

বলছি জুলাইয়ের গল্প,১৫ ই জুলাই রাত ওয়াসিম ফোন দেয়,তখন ফোন দেয়, বলে ভাই আগামীকাল প্রোগ্রাম কয়টায়, সাধারণত সেই ফোন দিয়ে সালাম দেয় এবং নরম সুরে কথা বলে কিন্তু সেইদিন তার কথাগুলো রুক্ষভাষী, আমিও বললাম আগামীকাল প্রোগ্রাম বর্তমান ওয়াসিম আকরাম স্টেশন (ষোলশহর স্টেশন) দুপুর ২ টায়।
ঠিক আছে ভাই, এরপরে ফোন রাখলো সালাম দিয়ে।

পরের দিন সকাল ১০ টা থেকেই ষোলশহর ওয়াসিম আকরাম স্টেশন এ ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় যেনো শিক্ষার্থীরা ১৬ ই জুলাইয়ের সমাবেশ না করতে পারে।

চট্টলার রাজপথে থমথমে অবস্থা, সাধারণ শিক্ষার্থীরাও রাজপথে নামার সব প্ল্যান করে, এরই মধ্যে ১ টা বেজে গেলো তখন সবাই সবাইর বাসা থেকে বের হলো এদিকে কিছুক্ষন পরে ওয়াসিম ফোন দিলো বললো ভাই ২ নং গেইট, ষোলশহর, মুরাদপুরে ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা অবস্থান করে রাখছে ছাত্ররা যেনো প্রোগ্রাম করতে না পারে এরই মধ্যে অনেক জায়গায় ছাত্রদের উপরে হামলা করতেছে।

রাসেল রাফি ঘোষণা দিলো আলোচনা করে বললো সবাই মুরাদপুরে আসুন। আমরাও সাহস বুকে রেখে সবাই মুরাদপুরে আসি এবং অবস্থান নি,যেদিকে ছাত্রদের পাচ্ছে সেখানেই হামলা করছে ক্যাডাররা।

এরই মধ্যে নোমান ভাই বলে উঠলো ফারুক ওয়াসিম নাই,মানে বুঝিনি এরই মধ্যে আমি ফোন দিচ্ছি ওয়াসিম কে ফোন ধরছেনা,এরই মধ্যে ডা: মেহেদী ভাইকে ফোন দিয়ে বলি ভাই ইমার্জেন্সি চট্টগ্রাম মেডিকেলে যান, ওয়াসিম কে নাকি মেরে ফেলছে সন্ত্রাসীরা, এরই মধ্যে ভাই গিয়ে নিশ্চিত করে ওয়াসিম নাই,তখন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, আমি কি করবো বুঝতে পারছিলামনা,তখন মাইকে এনাউন্স করি আমাদের সহযোদ্ধা ওয়াসিম আকরামকে হাসিনার বাহিনীরা মেরে ফেলছে এই বলে সবাইকে নিয়ে ষোলশহর অভিমুখে রওনা দি,ক্যাডার বাহিনি আমাদের ছাত্রদের দিকে তেড়ে আসে আমি সামনে চলে আসি রক্ত তখন কেমন করছিলো বুঝতে পারছিলামনা আমার ভাই নেই, এরই মধ্যে আমিও হাসিনার ক্যাডার বাহিনীর গুলি খেয়ে শুয়ে পড়ি তখন আবার গায়ে লাঠি সোঠা দিয়ে হামলা করে, কয়েকজন ভাই আমাকে ধরে হামজারবাগে একটা প্রাইভেট হসপিটালে নেয়, সেখানে রাখেনা এরপরে নিয়ে যায় এভারকেয়ারে তখন আর হুশ নেই, যখন হুশ আসে তখন দেখি আমার পাশে শরিফুল ইসলাম তুহিন, সাব্বির, জুয়েল, ইয়াছিন ভাই সহ আমার বাবা, কাকারা সবাই, সেখানেও আমাকে থাকতে দেয়নি পরে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম নিউ লাইফ হসপিটালে পরবর্তীতে আমাকে যে দেখতে আসে শরিফুল ইসলাম তুহিন ভাই ১৭ জুলাই গ্রেফতার হয়,আমি আমার ভাই ওয়াসিমের লাশটাকেও দেখতে পারলাম না, এই দু:খ কাকে বলি কিভাবে বলি, এই দু:খ আমার আজীবন থেকে যাবে।

মো: ওমর ফারুক সাগর সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম জেলা।
সদস্য সচিব, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদল।