ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ লামায় অবৈধ ইটভাটা পানি দিয়ে নিভিয়ে দিল প্রশাসন

আমরা পুলিশ, বিশ্বাস করুন আমরা আপনাদের শত্রু নই

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০১:৫১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩২৮৬ বার পড়া হয়েছে

আমরা পুলিশ, বিশ্বাস করুন আমরা আপনাদের শত্রু নই এ কথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কিছু পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লোভ, দলকানা কর্মকাণ্ড ও ইউনিফর্ম গায়ে জড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সঞ্চিত হয়েছে। সেই প্রবল ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন নিরপরাধ ও সাধারণ পুলিশ সদস্যরা।

বাংলাদেশের সাধারন পুলিশরা এখন থেকে সরকারি কোনো তবাদারীদের হুকুমের গোলাম হতে চায় না। সংবিধান অনুয়ায়ী যেটা করনীয় সেটা করবে বলেও জানান সাধারন পুলিশ সদস্যগণ।

এরই মধ্য নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নে পেলে অনির্দিষ্টিকালের জন্য কর্মবিরতি দিবে বলে ও ঘোষনা দেন।

এখন সময় খারাপ দেখে সুযোগ বুঝে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সটকে পড়েছেন। তাঁরা বিপদের মুখে রেখে গেছেন অসহায় ও নিরপরাধ পুলিশ সদস্যদের।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁরা আজ মানুষের আক্রোশের শিকার হচ্ছেন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশের এমন পরিণতির জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এটি সবার কাম্য।

সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, কিছু মানুষের অন্যায় কাজের শাস্তি দয়া করে পুরো পুলিশ বাহিনীকে দেবেন না।

যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁরা শাস্তি পাক। কিন্তু নিরপরাধ মানুষকে শাস্তি দেওয়া, হত্যা করা আরেকটি অন্যায়। বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক না কেন, তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাটা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

আপনি পুলিশকে পছন্দ করেন কিংবা না করেন, পুলিশ আপনার লাগবেই।

আজ রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত চত্বর; ব্যাংক বিমা অফিসের কাছে; এমনকি অনেক থানাতেও পুলিশ নেই।

এ অবস্থা থাকলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। সেই সুযোগকে বিভিন্ন মহল কাজে লাগানোর চিন্তা করতে পারে।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে লুটপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু মাঠে পুলিশ নেই, সেহেতু যে যেখান থেকে যা পারছে, লুটপাট করছে।

আমরা বিদেশে দেখেছি, মানুষ যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সবার আগে পুলিশকে ডাকে। বাংলাদেশেও তাই।

৯৯৯ এর মাধ্যমে আমরা প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষের ফোন কলে সাড়া দিই। আমি জানি, পুলিশের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে।

কিন্তু তাই বলে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করা, নিরপরাধ পুলিশ হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে পুলিশ সদস্যদের মনোবলকে দুর্বল করে দেওয়া কারণে প্রবলভাবেই মানুষের জরুরি এই সেবা ব্যাহত হবে।

বিশেষ করে, পুলিশ না থাকার সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তদের একটি অংশ ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা করে অস্ত্র-গুলি লুট করার চেষ্টা করছে। মানুষের সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে।

কিন্তু এসব অস্ত্র-গুলি যদি অপরাধীদের হাতে চলে যায়, তা দিয়ে আরও ভয়ানক অপরাধ সংঘটিত হতে পারে।

দয়াকরে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশের মতো জরুরি একটি জাতীয় সেবাকে বিপর্যস্ত করবেন না। এতে অনেক নিরীহ মানুষ ভিকটিম হবেন। অপরাধীরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করবে। এই বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্বার্থে দয়া করে পুলিশকে আক্রমণ থেকে বিরত থাকুন।

এটি হলে তা নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইমেজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে আমি সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, জনগণের হাতে আইন তুলে নেওয়া যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই হুমকিস্বরূপ।

কাজেই, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা বিপর্যস্ত হয়,এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন। পুলিশের কেউ অপরাধ করলে বিদ্যমান আইনে তাকে শাস্তি দিন। দিন শেষে আমরা আপনাদেরই ভাই, আত্মীয়স্বজন।

দয়াকরে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশের মতো জরুরি একটি জাতীয় সেবাকে বিপর্যস্ত করবেন না। এতে অনেক নিরীহ মানুষ ভিকটিম হবেন।

অপরাধীরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করবে। এই বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্বার্থে দয়া করে পুলিশকে আক্রমণ থেকে বিরত থাকুন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব

আমরা পুলিশ, বিশ্বাস করুন আমরা আপনাদের শত্রু নই

আপডেট সময় : ০১:৫১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

আমরা পুলিশ, বিশ্বাস করুন আমরা আপনাদের শত্রু নই এ কথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কিছু পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লোভ, দলকানা কর্মকাণ্ড ও ইউনিফর্ম গায়ে জড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সঞ্চিত হয়েছে। সেই প্রবল ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন নিরপরাধ ও সাধারণ পুলিশ সদস্যরা।

বাংলাদেশের সাধারন পুলিশরা এখন থেকে সরকারি কোনো তবাদারীদের হুকুমের গোলাম হতে চায় না। সংবিধান অনুয়ায়ী যেটা করনীয় সেটা করবে বলেও জানান সাধারন পুলিশ সদস্যগণ।

এরই মধ্য নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নে পেলে অনির্দিষ্টিকালের জন্য কর্মবিরতি দিবে বলে ও ঘোষনা দেন।

এখন সময় খারাপ দেখে সুযোগ বুঝে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সটকে পড়েছেন। তাঁরা বিপদের মুখে রেখে গেছেন অসহায় ও নিরপরাধ পুলিশ সদস্যদের।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁরা আজ মানুষের আক্রোশের শিকার হচ্ছেন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশের এমন পরিণতির জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এটি সবার কাম্য।

সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, কিছু মানুষের অন্যায় কাজের শাস্তি দয়া করে পুরো পুলিশ বাহিনীকে দেবেন না।

যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁরা শাস্তি পাক। কিন্তু নিরপরাধ মানুষকে শাস্তি দেওয়া, হত্যা করা আরেকটি অন্যায়। বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক না কেন, তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাটা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

আপনি পুলিশকে পছন্দ করেন কিংবা না করেন, পুলিশ আপনার লাগবেই।

আজ রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত চত্বর; ব্যাংক বিমা অফিসের কাছে; এমনকি অনেক থানাতেও পুলিশ নেই।

এ অবস্থা থাকলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। সেই সুযোগকে বিভিন্ন মহল কাজে লাগানোর চিন্তা করতে পারে।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে লুটপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু মাঠে পুলিশ নেই, সেহেতু যে যেখান থেকে যা পারছে, লুটপাট করছে।

আমরা বিদেশে দেখেছি, মানুষ যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সবার আগে পুলিশকে ডাকে। বাংলাদেশেও তাই।

৯৯৯ এর মাধ্যমে আমরা প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষের ফোন কলে সাড়া দিই। আমি জানি, পুলিশের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে।

কিন্তু তাই বলে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করা, নিরপরাধ পুলিশ হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে পুলিশ সদস্যদের মনোবলকে দুর্বল করে দেওয়া কারণে প্রবলভাবেই মানুষের জরুরি এই সেবা ব্যাহত হবে।

বিশেষ করে, পুলিশ না থাকার সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তদের একটি অংশ ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা করে অস্ত্র-গুলি লুট করার চেষ্টা করছে। মানুষের সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে।

কিন্তু এসব অস্ত্র-গুলি যদি অপরাধীদের হাতে চলে যায়, তা দিয়ে আরও ভয়ানক অপরাধ সংঘটিত হতে পারে।

দয়াকরে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশের মতো জরুরি একটি জাতীয় সেবাকে বিপর্যস্ত করবেন না। এতে অনেক নিরীহ মানুষ ভিকটিম হবেন। অপরাধীরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করবে। এই বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্বার্থে দয়া করে পুলিশকে আক্রমণ থেকে বিরত থাকুন।

এটি হলে তা নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইমেজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে আমি সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, জনগণের হাতে আইন তুলে নেওয়া যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই হুমকিস্বরূপ।

কাজেই, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা বিপর্যস্ত হয়,এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন। পুলিশের কেউ অপরাধ করলে বিদ্যমান আইনে তাকে শাস্তি দিন। দিন শেষে আমরা আপনাদেরই ভাই, আত্মীয়স্বজন।

দয়াকরে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশের মতো জরুরি একটি জাতীয় সেবাকে বিপর্যস্ত করবেন না। এতে অনেক নিরীহ মানুষ ভিকটিম হবেন।

অপরাধীরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করবে। এই বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্বার্থে দয়া করে পুলিশকে আক্রমণ থেকে বিরত থাকুন।