সিরাজুল ইসলাম
( ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি :
উওর অঞ্চল ঠাকুর গাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় শীতল বাতাসে পাকা সোনালি ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বেশ প্রফুল্লতা। ধান কাটতে হাতে কাঁচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষানিরা।হরিপুর, মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন
জেলা সহ হরিপুর উপজেলায় হেমন্তের আগমনে বাতাসে মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। গ্রামীণ জনজীবনে নবান্ন উৎসব যেন এখন শুধুই স্মৃতি। হেমন্তকালে মাঠে মাঠে দেখা যাচ্ছে দিগন্তবিস্তৃত সোনালি ধানের ক্ষেত এরই মধ্য ধান কাটা মাড়াই সহ শত ব্যস্ত সময় পার করছে এখানকার কৃষক, কেউ ধান কাটছেন আবার কেউবা যান্ত্রিক ছোট ট্রাক্টর, কিংবা ভ্যান গাড়ি, আবার কেউবা মাথায় ধান সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।এরই মধ্য আবার ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক কৃষাণী। হেমন্তে বাংলার গ্রাম হেমবরণী। কমলা রোদে উজ্জ্বল সোনালি ধানের গুচ্ছ। এ সময় ধান সোনালি রঙ ধারণ করে। পাকা ধানের সোনালি রঙ দেখে কৃষকের মন আনন্দে ভরে যায়। এ ঋতু মমতাময়ী জননীর মতো কৃষকের গোলা ভরে দেয় সোনালি ধানে। হৈমন্তী ধানের মিষ্টি গন্ধে আমোদিত হয় চারদিক। ঢেঁকির তালে আর ধান ভানার গানে নবান্নের উৎসবে মেতে ওঠে গ্রামবাসী। গ্রাম-বাংলায় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাঙ্গালী জাতির হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এবং
সবচেয়ে প্রাচীনতম উৎসব নবান্ন। নবান্ন উৎসবকে মনে করা হতো অসাম্প্রদায়িক উৎসব। হেমন্ত ঋতুতে অর্থাৎ অগ্রহায়ণ মাসে কৃষকের নতুন বার্তা নিয়ে আমন ধানের আগমন।
হেমন্তকালে এ উৎসব ছিল সার্বজনীন। নবান্ন ঘিরে (নতুন ধান ঘরে তোলা উৎসব) গ্রামে গ্রামে চলত পিঠা-পুলি ও খির-পায়েশের উৎসব। হেমন্তে ধান কাটা উৎসবে যোগ হতো সারি সারি গরু ও মহিষের গাড়ি। মাঠে মাঠে কৃষকরা দল বেধে ধান কাটা উৎসবে যোগ দিতেন। আর গেয়ে উঠতেন জারি-সারি ভাটিয়ালিসহ নানা ধরনের গান। এক কোথায় গ্রামীণ জীবনে হেমন্তের আবহ ছিল অন্তপ্রাণে গাঁথা।
কৃষকের উৎপাদিত সোনালি ধানের সোনালি দিন। এ উৎসব বাঙালি জাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে অথচ আজকের গ্রাম-বাংলার শিশুরা যেন স্বপ্নের মধ্যে নবান্নের উৎসবের ইতিকথা বাবা-মা কিংবা দাদা-দাদীর মুখে মুখে শুনে বিশেষ করে বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে এই নবান্ন উৎসবে। অগ্রহায়ণ মাস এলেই গ্রাম-বাংলায় বোঝা যেত যে নবান্ন আসছে। গ্রাম-বাংলায় বসত পালাগান, লোকনাট্য, কেচ্ছা-কাহিনী, ভাওয়াইয়া গান, লালনগীতি ও বাউল গানের আসর। নাচ আর গানে মুখরিত হতো গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল। বাংলাদেশে বর্তমান পালাগান আর বাউল গানের আসর বিপন্ন প্রায়, তেমন আর চোখে পড়ে না, নবান্ন উৎসবের সেই নতুন ধানের আলো চাল ও সেই চালের আটা দিয়ে মুড়ি-মুড়কি, খৈ, পাটিসাপ্টা, ভাপা পিঠা, পায়েশসহ নানা ধরনের পিঠার আয়োজন।ভাত বাঙ্গালী জাতির প্রধান খাদ্য, আর এই চাল আসে ধান থেকে। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের জুরি নেই তবে, এবার সারা দেশের ন্যায় দেশের উওর অঞ্চল ঠাকুর গাঁও জেলায় আমন ধান চাষ করা হয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৬৪৪ হেক্টর জমি। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন। যা গত বছরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ১৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর। যাতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন।হরিপুর উপজেলার কৃষক মিজানুর রহমান জানান আমি, জানান আমি প্রায় ৭-৮বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি আবহাওয়া অনুকূল এবছর ভালো হওয়ায় পোকার আক্রমন খুব কম হওয়া ধান ভালো হয়েছে বিঘা প্রতি ২০-২৫মন ধান হতে পারে।কৃষক জহুরুল হক জানান, এবছর হরিপুর উপজেলায়, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে,গতবছরের তুলনায় এবছর পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় খরচ কম হয়েছে। কৃষক মোতালেব জানান,কিছুদিনের মধ্যে, আমনের জমি গুলোতে আগাম ভুট্টা, গম,ওসরিষা চাষ হবে তাই ধান ঘরে তুলতে সবাই ব্যস্ত,দিনমজুর আলমগীর, জানান আমি প্রতিদিন, ধান কাটি এসময় আয় রোজগার ভালো দিনে ৪০০-৫০০টাকা ধান কেটে আয় হয় প্রায় প্রতিনিয়ত।
চেয়ারম্যানঃ-আব্দুর রহিম খান,
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো : মাসুদ রানা
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ঢাকার বার্তা ২৪