ঢাকা ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল বাগেরহাটে ঐতিহ্যকে মেলে ধরে রাখতে পিঠা উৎসব মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মধুপুরে বিয়ের ৭ মাস পর গৃহ বধূর রহস্য জনক মৃত্যু নড়াইলের গোবরায় মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন দুই বছর যাবত মায়ানমার কারাগারে বন্দী লামার ছেলে আবুল মোছা ইসলামপুরে মোটর সাইকেল সংঘর্ষে এক কিশোরের মৃত্যু আহত ২ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর উত্তরার লাভলীন রেস্টুরেন্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি চক্রের এক তরুণীর মিথ্যা অভিযোগ

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৫:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
  • ৩৩৩৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক,পিরোজপুরেরঃলন্ডনের বিএনপি নেতার নির্দেশে শ্লীলতাহানি চক্রের এক তরুণী বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অভিযোগের শেষ নেয়। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর ও উর্ধতন কর্মকর্তা কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

মঠবাড়িয়ায় বার বার আইন ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ তরুণীর বিরুদ্ধে বিপাকে তদন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

আইনের অপব্যবহার ও প্রশাসনকে বার বার বিভ্রান্ত করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় সালমা আক্তার নামে এক তরুণী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সৌদি প্রবাসী এবং তার পরিবারকে লাগাতার হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

নিরীহ এই পরিবারকে হয়রানি করতে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখন খোদ তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপাকে ফেলেছেন এই তরুণী।এ ঘটনায় উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের দেবত্র গ্রামের রতন তালুকদারের ছোট মেয়ে সালমা আক্তার (৩০) সহ আরো তিনজনকে অভিযুক্ত করে অর্থ আত্মসাৎ ও হয়রানির অভিযোগে মোকাম মঠবাড়িয়া উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন এই ভুক্তভোগী পরিবার৷

তাছাড়াও পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ও সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন হয়রানির শিকার ঐ সৌদি প্রবাসীর পরিবার। এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে নেমে অগ্রযাত্রার হাতে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। মামলার বিবরণী, বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা, ও ভুক্তভোগী এবং তদন্তকারীদের মতে, মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী নাসির উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুত্র ধরে নাসিরকে ফাঁসাতে শুরু করেন সালমা আক্তার। বিভিন্ন ভাবে ৪ বছরে প্রবাসে থাকা নাসিরের ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সালমা আক্তার ও তার পরিবার৷

এক পর্যায়ে প্রবাসী নাসির উদ্দীন দেশে ফিরে সালমা আক্তার কে বিয়ে করেন। কিন্ত নাসির উদ্দিনের অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই সে লক্ষ্য করতে থাকে তার স্ত্রী সালমা আক্তারের সাথে একাধিক পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে তাছাড়া সালমা আক্তারের আরো বিভিন্ন অসদাচরণও দৃষ্টিগোচর হয় নাসির উদ্দীনের। পারিবারিক ভাবেই এর প্রতিবাদ করলে সালমা আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি শুরু করেন।

সে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারের কাছে ১০ কাঠা জমি এবং জমি না হলে নগদ ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রথমে ভুয়া স্ট্যাম্প বানিয়ে প্রবাসী নাসির উদ্দিন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন সালমা আক্তার৷ কিন্ত পরবর্তীতে আসল স্ট্যাম্প দেখাতে না পারায় থানা পুলিশের তদন্তে তার ঐ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। প্রথম ধাপে ব্যর্থ হয়ে ২য় বার পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতকে বিভ্রান্ত করে বিয়ের কথা গোপন রেখে নিজের স্বামী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন সালমা আক্তার। কিন্ত পরবর্তীতে বিয়ের কথা লুকিয়ে ধর্ষণ মামলার অপচেষ্টার বিষয়টিও আইনিভাবে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়৷

এরপর পিরোজপুর জেলা লিগ্যাল এইডে গিয়েও অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয় সালমা আক্তার। নিজে বার বার ব্যর্থ হয়ে বাবা রতন তালুকদারকে দিয়ে এরপর মঠবাড়িয়া থানায় প্রবাসী নাসির উদ্দিনের বাবা আলকাজ উদ্দিনকে আসামী করে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করান সালমা আক্তার৷ এখানে ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করে বৃদ্ধ আলকাজ উদ্দিনকে জেল খাটায় তিনি।

অভিযোগ রয়েছে যে, সালমা আক্তারের পিতার দায়ের করা এই মিথ্যা মামলায় প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করা হলে ও তদন্তে বিষয়টি যে ভিত্তিহীন৷ অন্যদিকে সালমা আক্তার প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি করতে পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

এতে প্রকাশ না করায় সালমা আক্তার তৎকালীন মঠবাড়িয়া থানার ওসি সহ আরো ২জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। এই অগ্রযাত্রার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কতিপয় ব্ল্যাকমেইল সিন্ডিকেটের যোগসাজশে এখন পুলিশকেই হয়রানির মিশনে নেমেছেন এই প্রতারক সালমা আক্তার৷

বিশেষ অনুসন্ধানে সালমা আক্তারের সহযোগী হিসাবে আল আমিন নামে এক ভুয়া সাংবাদিকের যোগসাজশের প্রমাণ এসেছে অগ্রযাত্রার নিকট। অগ্রযাত্রার অনুসন্ধানে হাতে আসা একটি ভিডিওতে নিজেকে নিবন্ধনবিহীন ভুয়া “দৈনিক সোনার” বাংলাদেশ এর সম্পাদক দাবী করা আল আমিনকে ঐ তরুণীর সাথে কথা বলতে এবং মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসিকে হয়রানির পরিকল্পনা করার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।ঐ একই ভিডিওতে মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলতেও শোনা যায়।

একাধিক মামলার আসামী চিহ্নিত চাঁদাবাজ আল আমিন বর্তমানে সাতক্ষীরার পাটকেল ঘাটা থানায় হওয়া একটি চাঁদাবাজি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে সালমা আক্তার তার কথামতো কাজ না করায় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে যাচ্ছেন পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে। নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সালমা আক্তারের অভিযোগের তদন্তে যুক্ত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানায় প্রবাসীর পরিবারকে হয়রানি করতে রীতিমতো তাকে হুমকি ধামকি দেয় এই প্রতারক সালমা আক্তার৷ না হলে আইজিপি অফিসে অভিযোগ দিয়ে তাদের চাকরির ক্ষতি করবে বলেও প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করেন এই প্রতারক তরুণী। কিন্ত তবে ও সালমা আক্তারের অন্যায় আবদার মেনে না নিয়ে আইনের পথে অবিচল থাকায় বিভিন্ন দপ্তরে ঐ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছে এই তরুণী। আবার অন্যদিকে সালমা আক্তারের লাগাতার হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগী প্রবাসী নাসির উদ্দিন মোকাম মঠবাড়িয়া উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন৷

তার মামলার তদন্তভার দেয়া হয় মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জনবা আশরাফুর রহমানকে। তদন্ত শেষে আশরাফুর রহমানের জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে যে সালমা আক্তারের প্রতারণা ও অপতৎপরতার বিষয়টি৷ মামলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় সালমা আক্তার ও তার পরিবার লোভী প্রকৃতির। সৌদি প্রবাসী নাসির উদ্দিন প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার কাছ থেকে মোট ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেবার প্রমাণ পাবার কথাও উল্লেখ আছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের দেয়া প্রতিবেদনে৷ তার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সালমা ও তার পরিবার কর্তৃক ১০ কাঠা জমি কিংবা ৫ লক্ষ টাকার জন্য প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে লাগাতার হয়রানির বিষয়টি।সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এর তদন্তে এর সত্যতাও মিলছে বলে উল্লেখ রয়েছে তদন্ত এই প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে জানা যায় মঠবাড়িয়া উপজেলার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সাথে তিনি এ বিষয়টি তিনি অবগত। অভিযুক্ত সালমা আক্তার আইনের অপব্যবহার করে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি করছে এর সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষণ করেন৷

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রবাসী নাসির উদ্দিনের বাবা আলকাজ উদ্দিন বলেন,
নারী হওয়ার সুবাদে অভিযুক্ত সালমা আক্তার আইনকে নিয়ে নিজের মতো করে খেলছেন৷ আইনকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন,এই এলাকায় আতঙ্ক হিসাবে পরিচিত সালমা আক্তারের পরিবার৷ তারা নিজেদের স্বার্থে যেকোনো মানুষকে যেকোনোভাবে ফাঁসাতে কোন দ্বিধা করেনা৷পান থেকে চুন খসলেই ছুটে যান থানা কিংবা আদালতে।এখন আমরাও তার ফাঁদে পড়েছি। আইন,আদালত ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে সালমা আক্তারের হয়রানি থেকে মুক্তি চেয়ে তিনি এ ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক সালমা আক্তার ও তার পরিবারের বিচার দাবি করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান ক্ষমতায় থাকা সরকার এবং যারা সাহসীভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বিরুদ্ধে বিএনপির অপপ্রচারের শেষ নেয়।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি অধ্যুষিত অঞ্চলে দ্বায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলের জামায়াত ও বিএনপি নেতারা সাহসী এসব কর্মকর্তাদের কখনো মামলা, কখনো স্পর্শকাতর অভিযোগ আনছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,আগামী জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে জামায়াত বিএনপির এই চক্র দেশের বিভিন্ন জায়গায় ততই মাথা চাঁড়া দিচ্ছে। মূলত আগামি জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করেই এই চক্রান্তের অংশ হিসাবে সাহসী এসব কর্মকর্তার নামে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ করছেন একটি মহল।এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কখনও কখনও ওই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তবে শেষমেশ এসব অভিযোগের কোনো সুরাহা হচ্ছে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লামা ফাঁসিয়াখালীর শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থল হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি চক্রের এক তরুণীর মিথ্যা অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৩:৪৫:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক,পিরোজপুরেরঃলন্ডনের বিএনপি নেতার নির্দেশে শ্লীলতাহানি চক্রের এক তরুণী বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অভিযোগের শেষ নেয়। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর ও উর্ধতন কর্মকর্তা কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

মঠবাড়িয়ায় বার বার আইন ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ তরুণীর বিরুদ্ধে বিপাকে তদন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

আইনের অপব্যবহার ও প্রশাসনকে বার বার বিভ্রান্ত করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় সালমা আক্তার নামে এক তরুণী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সৌদি প্রবাসী এবং তার পরিবারকে লাগাতার হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

নিরীহ এই পরিবারকে হয়রানি করতে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখন খোদ তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপাকে ফেলেছেন এই তরুণী।এ ঘটনায় উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের দেবত্র গ্রামের রতন তালুকদারের ছোট মেয়ে সালমা আক্তার (৩০) সহ আরো তিনজনকে অভিযুক্ত করে অর্থ আত্মসাৎ ও হয়রানির অভিযোগে মোকাম মঠবাড়িয়া উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন এই ভুক্তভোগী পরিবার৷

তাছাড়াও পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ও সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন হয়রানির শিকার ঐ সৌদি প্রবাসীর পরিবার। এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে নেমে অগ্রযাত্রার হাতে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। মামলার বিবরণী, বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা, ও ভুক্তভোগী এবং তদন্তকারীদের মতে, মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী নাসির উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুত্র ধরে নাসিরকে ফাঁসাতে শুরু করেন সালমা আক্তার। বিভিন্ন ভাবে ৪ বছরে প্রবাসে থাকা নাসিরের ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সালমা আক্তার ও তার পরিবার৷

এক পর্যায়ে প্রবাসী নাসির উদ্দীন দেশে ফিরে সালমা আক্তার কে বিয়ে করেন। কিন্ত নাসির উদ্দিনের অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই সে লক্ষ্য করতে থাকে তার স্ত্রী সালমা আক্তারের সাথে একাধিক পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে তাছাড়া সালমা আক্তারের আরো বিভিন্ন অসদাচরণও দৃষ্টিগোচর হয় নাসির উদ্দীনের। পারিবারিক ভাবেই এর প্রতিবাদ করলে সালমা আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি শুরু করেন।

সে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারের কাছে ১০ কাঠা জমি এবং জমি না হলে নগদ ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রথমে ভুয়া স্ট্যাম্প বানিয়ে প্রবাসী নাসির উদ্দিন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন সালমা আক্তার৷ কিন্ত পরবর্তীতে আসল স্ট্যাম্প দেখাতে না পারায় থানা পুলিশের তদন্তে তার ঐ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। প্রথম ধাপে ব্যর্থ হয়ে ২য় বার পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতকে বিভ্রান্ত করে বিয়ের কথা গোপন রেখে নিজের স্বামী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন সালমা আক্তার। কিন্ত পরবর্তীতে বিয়ের কথা লুকিয়ে ধর্ষণ মামলার অপচেষ্টার বিষয়টিও আইনিভাবে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়৷

এরপর পিরোজপুর জেলা লিগ্যাল এইডে গিয়েও অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয় সালমা আক্তার। নিজে বার বার ব্যর্থ হয়ে বাবা রতন তালুকদারকে দিয়ে এরপর মঠবাড়িয়া থানায় প্রবাসী নাসির উদ্দিনের বাবা আলকাজ উদ্দিনকে আসামী করে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করান সালমা আক্তার৷ এখানে ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করে বৃদ্ধ আলকাজ উদ্দিনকে জেল খাটায় তিনি।

অভিযোগ রয়েছে যে, সালমা আক্তারের পিতার দায়ের করা এই মিথ্যা মামলায় প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করা হলে ও তদন্তে বিষয়টি যে ভিত্তিহীন৷ অন্যদিকে সালমা আক্তার প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি করতে পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

এতে প্রকাশ না করায় সালমা আক্তার তৎকালীন মঠবাড়িয়া থানার ওসি সহ আরো ২জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। এই অগ্রযাত্রার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কতিপয় ব্ল্যাকমেইল সিন্ডিকেটের যোগসাজশে এখন পুলিশকেই হয়রানির মিশনে নেমেছেন এই প্রতারক সালমা আক্তার৷

বিশেষ অনুসন্ধানে সালমা আক্তারের সহযোগী হিসাবে আল আমিন নামে এক ভুয়া সাংবাদিকের যোগসাজশের প্রমাণ এসেছে অগ্রযাত্রার নিকট। অগ্রযাত্রার অনুসন্ধানে হাতে আসা একটি ভিডিওতে নিজেকে নিবন্ধনবিহীন ভুয়া “দৈনিক সোনার” বাংলাদেশ এর সম্পাদক দাবী করা আল আমিনকে ঐ তরুণীর সাথে কথা বলতে এবং মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসিকে হয়রানির পরিকল্পনা করার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।ঐ একই ভিডিওতে মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলতেও শোনা যায়।

একাধিক মামলার আসামী চিহ্নিত চাঁদাবাজ আল আমিন বর্তমানে সাতক্ষীরার পাটকেল ঘাটা থানায় হওয়া একটি চাঁদাবাজি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে সালমা আক্তার তার কথামতো কাজ না করায় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে যাচ্ছেন পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে। নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সালমা আক্তারের অভিযোগের তদন্তে যুক্ত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানায় প্রবাসীর পরিবারকে হয়রানি করতে রীতিমতো তাকে হুমকি ধামকি দেয় এই প্রতারক সালমা আক্তার৷ না হলে আইজিপি অফিসে অভিযোগ দিয়ে তাদের চাকরির ক্ষতি করবে বলেও প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করেন এই প্রতারক তরুণী। কিন্ত তবে ও সালমা আক্তারের অন্যায় আবদার মেনে না নিয়ে আইনের পথে অবিচল থাকায় বিভিন্ন দপ্তরে ঐ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছে এই তরুণী। আবার অন্যদিকে সালমা আক্তারের লাগাতার হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগী প্রবাসী নাসির উদ্দিন মোকাম মঠবাড়িয়া উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন৷

তার মামলার তদন্তভার দেয়া হয় মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জনবা আশরাফুর রহমানকে। তদন্ত শেষে আশরাফুর রহমানের জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে যে সালমা আক্তারের প্রতারণা ও অপতৎপরতার বিষয়টি৷ মামলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় সালমা আক্তার ও তার পরিবার লোভী প্রকৃতির। সৌদি প্রবাসী নাসির উদ্দিন প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার কাছ থেকে মোট ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেবার প্রমাণ পাবার কথাও উল্লেখ আছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের দেয়া প্রতিবেদনে৷ তার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সালমা ও তার পরিবার কর্তৃক ১০ কাঠা জমি কিংবা ৫ লক্ষ টাকার জন্য প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে লাগাতার হয়রানির বিষয়টি।সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এর তদন্তে এর সত্যতাও মিলছে বলে উল্লেখ রয়েছে তদন্ত এই প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে জানা যায় মঠবাড়িয়া উপজেলার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সাথে তিনি এ বিষয়টি তিনি অবগত। অভিযুক্ত সালমা আক্তার আইনের অপব্যবহার করে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের পরিবারকে হয়রানি করছে এর সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষণ করেন৷

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রবাসী নাসির উদ্দিনের বাবা আলকাজ উদ্দিন বলেন,
নারী হওয়ার সুবাদে অভিযুক্ত সালমা আক্তার আইনকে নিয়ে নিজের মতো করে খেলছেন৷ আইনকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন,এই এলাকায় আতঙ্ক হিসাবে পরিচিত সালমা আক্তারের পরিবার৷ তারা নিজেদের স্বার্থে যেকোনো মানুষকে যেকোনোভাবে ফাঁসাতে কোন দ্বিধা করেনা৷পান থেকে চুন খসলেই ছুটে যান থানা কিংবা আদালতে।এখন আমরাও তার ফাঁদে পড়েছি। আইন,আদালত ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে সালমা আক্তারের হয়রানি থেকে মুক্তি চেয়ে তিনি এ ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক সালমা আক্তার ও তার পরিবারের বিচার দাবি করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান ক্ষমতায় থাকা সরকার এবং যারা সাহসীভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বিরুদ্ধে বিএনপির অপপ্রচারের শেষ নেয়।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি অধ্যুষিত অঞ্চলে দ্বায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলের জামায়াত ও বিএনপি নেতারা সাহসী এসব কর্মকর্তাদের কখনো মামলা, কখনো স্পর্শকাতর অভিযোগ আনছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,আগামী জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে জামায়াত বিএনপির এই চক্র দেশের বিভিন্ন জায়গায় ততই মাথা চাঁড়া দিচ্ছে। মূলত আগামি জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করেই এই চক্রান্তের অংশ হিসাবে সাহসী এসব কর্মকর্তার নামে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ করছেন একটি মহল।এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কখনও কখনও ওই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তবে শেষমেশ এসব অভিযোগের কোনো সুরাহা হচ্ছে না।