র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এ পর্যন্ত জঙ্গি, সাইবার ক্রাইম, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, মানবপাচারকারী, চাঁদাবাজ, নৈরাজ্যকারী, বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামী, অপহরণকারী, জালনোট ব্যবসায়ী, প্রতারক চক্র, ধর্ষকসহ বিভিন্ন অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয়কারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব-৩ সদা সচেষ্ট।
এরই ধারাবাহিকতায় অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয়কারী চক্রের কতিপয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বিনা অনুমতিতে বিক্রয় করে আসছে।গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩
এর একটি আভিযানিক দল ও বিটিআরসির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ১৩ ফেব্রয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ ৫ ঘটিকার সময় রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয়কারী চক্রের মূলহোতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩০)এবং তার সহযোগী মোঃ ফয়সাল হোসেন (২৭), মোঃ আশিক শেখ (২০)মোঃ শরিফুল (২৪)মোঃ রাসেল (২৬)কুমিল্লাদের’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকালে এই চক্রের সদস্যদের হেফাজত হতে বিপুল পরিমান অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার,টি বুস্টার আউটডোর এন্টিনা,রেডিও ট্রান্সমিটার,বুস্টার ইনডোর এন্টিনা, ০৩ টি বুস্টার ক্যাবল, কনভার্টার, ১৫ টি চার্জার, ১০ টি মোবাইল ফোন, ২০ টি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে র্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে র্যাব-৩ এর অধিনায়র লেঃকর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানায় যে, তারা বিগত পাঁচ বছর যাবৎ অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয় করে আসছে। ধৃত আসামিরা রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ‘‘এ্যাপ্রো টেকনোলজি’’ নামক একটি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান হতে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার ক্রয় করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করতো।
এছাড়াও তারা হোয়াটস অ্যাপ্ ও ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার এর যন্ত্রাংশ লাইসেন্স ব্যতিত বিক্রি করে থাকে। উক্ত রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্ক এর কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এই কারণে বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করার উদ্দেশ্যে উচ্চ মূল্যে এইসব অবৈধ ডিভাইস ক্রয় করে দূর্গম এলাকায় থেকে যে কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে। এভাবে অপরাধীরা নির্বিঘেœ অপরাধ করে নিজেদের আড়াল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী এড়ানোর অপচেষ্টা করে থাকে। ধৃত আসামীরা আরও জানায় যে, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর ফোর-জি রাউটার আমদানির নামে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে।
তিনি আরো জানান,এছাড়াও বিভিন্ন চোরাই পথের মাধ্যমেও তারা এসব যন্ত্রাংশ আমদানি করে থাকে। পরবর্তীতে তারা হোয়াটসঅ্যাপে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ উচ্চমূল্যে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিক্রয় করে থাকে। এই চক্রটি বিগত পাঁচ বছরে অজ¯্র রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করেছে। চক্রটি প্রতি সেট এন্টেনা ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি সেট রেডিও ট্রান্সমিটার ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে আসছে।
বিটিআরসির অনুমোদন ব্যতিত এসকল যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। ধৃত আসামীরা পাঁচ বছর যাবৎ অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার এর ক্যাবলসহ যন্ত্রাংশসমূহ মজুদ, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয় ও প্রদর্শন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করেছে।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।